চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার দরিদ্র জনগণের জন্য নির্মিত একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র মালিকানা জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে দখলমুক্ত হয়েছে। ২৪ জুন আজ দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়ে এটি পুনরুদ্ধার করা হয়। এ সময় অবরোধে জড়িত থাকার অভিযোগে শারমিন আক্তার শাহানাজ নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের কাঁশারা এলাকায় অবস্থিত এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি সিবিএইচসি (CBHC) প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নির্মিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দা নোয়াব আলী ভূঁইয়া, মনোয়ারা বেগম ও মনির উদ্দিনের দেওয়া জমিতে ২০১৮ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২০২১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এটি উদ্বোধন করা হয়। তারপর থেকে ক্লিনিকটিতে স্থানীয়দের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসা হচ্ছিল।
সম্প্রতি স্থানীয় আবদুর রহিম ও তাঁর স্ত্রী শারমিন আক্তার শাহানাজ ক্লিনিকের জমি নিজেদের বলে দাবি করেন। জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা দায়েরের পাশাপাশি তারা একাধিকবার ক্লিনিকের কার্যক্রমে বাধা দেন। সর্বশেষ গত ১৪ জুন তাঁরা লোকজন নিয়ে এসে দায়িত্বরত চিকিৎসককে মারধর করেন এবং চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন। পরে ক্লিনিকের প্রবেশপথে গাছগাছালি দিয়ে বেড়া নির্মাণ করে সেটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নেয়। মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার উপস্থিতিতে যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে ক্লিনিকটি দখলমুক্ত করা হয় এবং চিকিৎসাসেবা পুনরায় চালু করা হয়। অভিযুক্ত শারমিন আক্তার শাহানাজকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, “ক্লিনিকটি ২০২১ সালে চালু হওয়ার পর থেকে সেবা দিয়ে আসছিল। হঠাৎ করে কিছু ব্যক্তি সম্পত্তির দাবি তুলে সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কাগজপত্র যাচাই করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি এবং প্রশাসনের সহায়তায় মঙ্গলবার ক্লিনিকটি দখলমুক্ত করে সেবা পুনরায় চালু করা হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, “গ্রামীণ জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা এই অভিযান পরিচালনা করেছি। সরকারি কাজে যারা বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,২৪ জুন ২০২৫