১৫ November ২০২৪ Friday ৮:৫২:০৮ PM |
তালতলী ((বরগুনা) প্রতিনিধি:
বরগুনার তালতলীতে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে বসেছে রাস উৎসব-২০২৪। প্রতিবছর শীতের আগমনে এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ঘিরে বরগুনা জেলার মানুষ অপেক্ষায় থাকে। একদিকে সমুদ্রের গর্জন অন্যদিকে পূজার সংগীতের সুর ও ঢোলের আওয়াজ সব মিলে উৎসব যেন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সূর্যের আলো ফোটার আগেই শুভসন্ধ্যা সৈকতে শতশত সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ সমবেত হতে থাকে এবং সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাস উৎসবে আসা পুণ্যার্থীরা সূর্য দেবতাকে প্রণাম জানিয়ে ও উলুধ্বনি দিয়ে সাগরে পুণ্যস্নানে নেমে পড়েন।
পুণ্য লাভের আশায় এবং পরলোকে যাওয়া স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় সাগরপাড়ে প্রার্থনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
রাস উৎসবের ঐতিহ্য এবং গুরুত্ব:
তালতলীর শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে রাস উৎসবের আয়োজন দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। এই উৎসব হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষ একটি দিন হলেও অন্যান্য ধর্মের মানুষও এখানে সম্প্রীতির বন্ধনে মিলিত হয়। মূলত, রাস উৎসব রাধাকৃষ্ণের লীলা কীর্তনের স্মৃতিচারণে উদ্যাপন করা হয়।
জানা যায়, এবারের উৎসবে থাকছে বিশেষ কিছু আয়োজন, যা এই উৎসবকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এছাড়া ২০২৪ সালের রাস উৎসবে স্থানীয় শিল্পীরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নিচ্ছেন, যার মধ্যে অন্যতম রাধাকৃষ্ণের প্রেমকাহিনী বিষয়ক নাটক, সংগীতানুষ্ঠান এবং নৃত্য।
বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে মেলায় আয়োজন করা হয়েছে সমুদ্রের দিকে মুখ করে আলোর প্রদর্শনী, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে মিলে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে। এছাড়া পরিবেশ সচেতনতার বার্তা নিয়ে এবছর প্রথমবারের মতো পরিবেশবান্ধব সামগ্রী বিক্রির স্টলও থাকছে, যা দর্শনার্থীদের মন কেড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বীরেন মণ্ডল বলেন, রাস উৎসব আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতি বছর এই দিনে তালতলীর সমুদ্র সৈকত যেন এক নতুন রূপে সেজে ওঠে। নতুন প্রজন্মকে ঐতিহ্য শেখানোর এক অনন্য সুযোগ এটি।
রাস উৎসব শুধু ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই নয়; এটি বরগুনার মানুষের জন্য এক সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ এখানে একত্রিত হয়ে উৎসব উদ্যাপন করেন। বরগুনার রাস উৎসবের এই ঐতিহ্য স্থানীয়দের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় করে, যা সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এই উৎসবে পুলিশ, নৌবাহিনী-সহ সাদা পোশাকে বাহিনীর সদস্যরা তাদের নিরাপত্তা দিয়েছেন।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, মেলা ও উৎসবের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। এটা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয় এটা পর্যটন উন্নয়নের জন্যও শুভ সন্ধ্যাকে সমৃদ্ধ করেছে।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |