মরিয়ম হত্যায় আবাসিক হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা | munshiganjnews.com

মরিয়ম হত্যায় আবাসিক হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা | munshiganjnews.com

মরিয়ম হত্যায় আবাসিক হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা | munshiganjnews.comমোহাম্মদ সেলিম
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মহাকালী ইউনিয়নের মদিনা বাজার এলাকায় মদিনাতুল মুনওয়ারা দারুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে শুরু করেছেন। গতকাল সোমবার থেকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদেরকে এই মাদ্রাসা থেকে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার সময় হলে থাকার সকল ধরণের জিনিসপত্রও নিতে দেখা গেছে। অনেকে আবার তাদের সন্তানদেরকে এখানে রাখার সময়ে ছোট ছোট স্টীলের আলমারী দিয়ে ছিলেন জিনিসপত্র রাখার জন্য। সেগুলোও এইদিন দলবেধে তাদের নিতে দেখা যায়।

এদিন শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপচারিতা হয়। তারা তখন জানান, এখানে মরিয়ম হত্যাকান্ডের পর এই মাদ্রাসাটি অলিখিতভাবেই আনুষ্ঠানিকভাবে এটি বন্ধ হয়ে গেছে। তাই তারা তাদের সন্তানদের জিনিসপত্র নিতে গতকাল সোমবার এখানে এসেছেন। এই বাড়ির মালিক মমতাজ উদ্দিন মোল্লার কাছে এই মাদ্রাসার মুল চাবি রয়েছে।

তিনি মাদ্রাসার প্রধান কক্ষের তালা খুলে দেন। একজন মহিলা তাদেরকে মাদ্রাসার অন্দর মহলে নিয়ে যায়। তাদের পড়ুয়া সন্তানদের আলমারীর চাবিতে এটি খুলে গেলে সেটি তারা কক্ষ থেকে বের করে আনেন। তার সাথে তারা তাদের ব্যবহারের জিনিসপত্রও নিয়ে আসেন।

দিনভর অনেক অভিভাবকই এভাবে মালামাল মাদ্রাসা থেকে বের করছেন বলে দেখা গেছে। এদিকে এখনো অনেক পড়ুয়াদের মালামাল মাদ্রাসার ভিতরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। অভিভাকরা জানান, আমাদের অনেকের বাড়ি এই মাদ্রাসার আশপাশে। তবুও আমরা মাদ্রাসার আবাসিক ব্যবস্থায় সন্তানদের পড়াতাম প্রধানত এই মাদ্রাসায় পড়ুয়াদের রাতে তাহাজ্জুয়ের নামাজ পড়ানো হতো।

এই কারণে আমরা আমাদের সন্তানদেরকে এখানে রেখে আসতাম। আমরা অনেকেই বাড়ি থেকেই খাবার নিয়ে আসতাম এখানে। তবে যাদের এই ব্যবস্থা নেই তারা মাদ্রাসার ব্যবস্থায় খাবার খেতো। মরিয়ম হত্যাকান্ডে এখানে আর সন্তানদেরকে পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই সবকিছু নিয়ে যাচ্ছি।

জানা যায়, মাওলানা মুফতি জালালউদ্দিন ১০ বছর আগে মমতাজ উদ্দিন মোল্লার কাছে ঘর ভাড়া নিয়ে এখানে এই মাদ্রাসা গড়ে তুলেন। তখন ৮হাজার টাকা ভাড়া দিতেন। এখন কয়েক বছর ধরে ১১হাজার টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন মমতাজ উদ্দিন মোল্লা।

মাওলানা মুফতি জালালউদ্দিনের বোনের জামাই হচ্ছেন ইউনুস প্রধান। মাওলানা মুফতি জালালউদ্দিনের পরিবর্তে ইউনুস প্রধান ও তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার এবং মাওলানা মুফতি জালালউদ্দিনের স্ত্রী হাবিবা আক্তার সুইটি এই মাদ্রাসাটি পরিচালনা করতেন বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় ইউনুস প্রধান গ্রেফতার হলেও অন্য আসামীরা এখনো পলাতক রয়েছে।

কিন্তু এখানে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, আসামীরা পলাতক থাকা সত্বেও মাদ্রাসার অন্দর মহলের চাবি চলে এসেছে বাড়ির মালিক মমতাজ উদ্দিন মোল্লার হাতে। এখন তিনিই আবাসিকের মালামাল বের করা জন্য অভিভাবকদেরকে ভিতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। তার সথে একজন মহিলাকে এখানে অভিভাবকদেও সাথে কাজ করতে দেখা গেছে। তিনি আসলে কে?

মাদ্রাসার অন্দর মহলের চাবিটি কিভাবে তার কাছে আসলো তা নিয়ে রহস্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। পলাতক আসামীদের সাথে বাড়ির মালিকের গোপনে কোন না কোনভাবে যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি এখানকার প্রতিদিনের ঘটনা সর্ম্পকে পলাতক আসামীদের আপডেট তথ্য দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

এই বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত হওয়া উচিত বলে অনেকেই মনে করছেন। এই ঘটনার পিছনে নেপথ্যে অনেকেই রয়েছে বলে নানা রকমের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

Explore More Districts