যেনতেন নির্বাচনের মাধ্যমে আর কারো ক্ষমতায় আসার সুযোগ নাই : গাজী আতাউর রহমান

যেনতেন নির্বাচনের মাধ্যমে আর কারো ক্ষমতায় আসার সুযোগ নাই : গাজী আতাউর রহমান

নতুন বাংলাদেশে যেনতেন নির্বাচনের মাধ্যমে আর কারো ক্ষমতায় আসার সুযোগ নাই বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে -এর যুগ্ম-মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, অতিতে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ যেন-তেন নির্বাচনের মাধ্যমে দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করেছিলো। নতুন বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম আর কোন রাজনৈতিক দলকে সেই সুযোগ দিবেনা। যেই নির্বাচনের মাধ্যমে স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, দূর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ তৈরী হয়–আমরা সেই নির্বাচন পদ্ধতি বাতিলের দাবি করছি। ফ্যাসিবাদমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) নির্বাচনের বিকল্প কোন নেই। দেশের রাষ্ট্রসংস্থান সংস্কার, অতীতের গণহত্যা ও অন্যায়ের বিচার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি এবং ফলপ্রসূ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য পিআর পদ্ধতি অপরিহার্য।’

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাঁদপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী হাসান আলী হাই স্কুল মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ‌ চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার ও খুনীদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে মওলানা গাজী আতাউর রহমান আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ তখনই মাথাচাড়া দেয়, যখন ক্ষমতা এককভাবে কোনো একদল বা ব্যক্তির হাতে সীমাবদ্ধ থাকে। স্বাধীনতার পর যে সমস্ত দল ক্ষমতায় এসেছে সবাই দুর্নীতি করেছে। সবাই দেশকে লুটে পুটে খেয়েছে। এখন সময় হয়েছে পরিবর্তনের। নতুন কোনো স্বৈরাচারকে ক্ষমতায় আনতে ২৪শের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতা জীবন দেয়নি। তের মাস আগে বাংলাদেশ থেকে সৈরাচার বিদায় হয়েছে। আমরা স্বপ্ন দেখেছি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এজন্যই ছাত্র-জনতা, শ্রমিক-মজুর জীবন দিয়েছিল। অথচ অভ্যুত্থানের পরে যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল, তারা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। আমাদের যে পক্ষটি স্বৈরাচারের নির্যাতনের শিকার হয়ে জেল জুলুম খেটেছে, তারাও এখন অতীতের রাজনীতিতে ফিরে যেতে চায়। পতিত স্বৈরাচার দলটি লুটপাট, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি আর গুম-খনের রাজত্ব কায়েম করেছিল, জুলাই আন্দোলনের একটি পক্ষ সেটাই বহলা রাখতে চায়। আর আমরা আরেকটি পক্ষ চাই অতীতের সেই অপরাজনীতি বাদ দিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে। আমরা ভারতের দেয়া ৭২ এর সংবিধান ছুড়ে ফেলে নতুন করে দেশ গড়তে চাই। যে সংবিধান বোগলধাবা করে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ডাকসু নির্বাচনে তরুণ প্রজন্ম যে মেসেজ দিয়েছে, তা কোন কোন রাজনৈতিক দল এখনও বুঝে উঠতে পারছে না। এদেশের তরুণ প্রজন্ম আর কোন ভোট ডাকাতি নির্বাচন হতে দিবে না। আগামী নির্বাচনে পীর মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরামদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম তৈরি করবে। তাই আগামী নির্বাচনে আমরা সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে লড়াই করবো।

গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী (চাঁদপুর-৪) শায়খুল হাদিস আল্লামা মকবুল হোসাইন, (চাঁদপুর-৩) শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবদিন, (চাঁদপুর-২) মুফতি মানসুর আহমেদ সাকী, (চাঁদপুর-১) মুফতি উমর ফারুক ইবরাহীমি কাসেমী, (চাঁদপুর-৫) আলহাজ মোহাম্মদ আলী পাটওয়ারী।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমানের সভাপত্বে ও সেক্রেটার কেএম ইয়াসিন রাশেদসানীর সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা জামায়াতে আমির মাওলানা মোঃ বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, খেলাফত মজলিশ চাঁদপুর জেলা সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ, চাঁদপুর জেলা ইসলামী আন্দোলনের প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নুর উদ্দিন খান, সহ অর্থ সম্পাদক একে মোখতার হোসেন প্রমুখ।

এ সময় চাঁদপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাড. শাহজাহান মিয়া, পৌর জামায়াতের আমির এডভোকেট শাহজাহান খান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চাঁদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চাঁদপুর জেলার প্রধান সমন্বয়ক মাহবুবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী মুহাম্মদ হানিফ, মাওলানা আফসার উদ্দিন, মাওলানা জামিল আহমাদ জাকির, জয়েন্ট সেক্রেটারী শাহজামাল গাজী সোহাগ, মাওলানা নাসির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হেলাল আহমাদ, প্রচার সম্পাদক আবু বকর, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আবদুল্লাহ তপাদার, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নুরুদ্দীন খান, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মুফতি মানসুর আহমাদ, শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রুবেল, সহকারি দপ্তর সম্পাদক মুফতি আল-আমিন, শহর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, সদর উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি ডাঃ বেলাল হোসাইন, ইসলামি শ্রমিক আন্দোলন চাঁদপুর জেলার সভাপতি আবুল বাশার তালুকদার, ইসলামী যুব আন্দোলন জেলা সাধারণ সম্পাদক গাজী নেয়ামত উল্লাহ, আইমা পরিষদ জেলা সহ সভাপতি মাওলানা আনোয়ার আল নোমান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন জেলার সভাপতি ডিএম ফয়সালসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুর থেকেই সমাবেশস্থলে বিভিন্ন ওয়ার্ড ইউনিয়ন ও উপজেলাগুলো থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। সমাবেশে নেতাকর্মীদের ভিড়ে সমাবেশের মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে।

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম/ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Explore More Districts