স্বেচ্ছাচারিতা ও অদক্ষতার বলি কারিগরির প্রায় এক হাজার শিক্ষক
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও রিভিউ কার্যক্রমকে অসত্য তথ্যের মাধ্যমে ত্বরান্বিত করতে শিক্ষা মন্ত্রী ড. দিপু মনিকে ভুল বোঝানোর উদ্দেশ্যে পত্র জারি করেন সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান। পত্র মাধ্যমে এমপিও রিভিউ কার্যক্রমের চুলচেড়া বিশ্লেষণের তকমা দিয়ে একশত ২০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিলের সুপারিশ করা হয়। যা কার্যত ভুল তথ্য, স্বেচ্ছাচারিতা এবং অনভিজ্ঞতার, অদক্ষতার ফল হিসেবে বিবেচিত। ফলস্বরূপ প্রায় এক হাজার শিক্ষকের পেটে লাথি দেয়ার কৃতিত্ব গড়েন ঐ সচিব।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহাবুব হোসেন ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আলাদীনের চেরাগ ক্ষ্যাত সহকারী পরিচালক মো.জহুরুল ইসলামের সাথে মিলে স্বেচ্ছাচারিতার প্রমান বেরিয়ে এসেছে। গত ২৯ এপ্রিল ২০২০ ইং তারিখে শিক্ষা মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত একটি সিদ্ধান্তে দেখা যাচ্ছে কৃষি ডিপ্লোমা, এইচ.এস.সি, বি.এম, ও ভোকেশনালের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রত্যেক স্পেশালাইজেশনে ৪০ জন করে ধরে এমপিও যোগ্যতা নিরুপন করা হয়েছে। বাস্তবে শুধু মাত্র কৃষি ডিপ্লোমাতে ৪০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির নিয়ম ছিল। অপরদিকে এস.এস.সি, ভোকেশনাল এইচ.এস.সি, বি.এম এ ৩০ জন করে ভর্তির আদেশ ছিল কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের।
এ বিষয়ে তখনকার এমপিও রিভিউ কার্যক্রমে কর্মরত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধির (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে, মিটিংয়ে এডি জহুরুল ইসলাম আমাদের কোন কথা বলতে দিতেন না এবং তিনি যা যা বলতেন মাহাবুব স্যার তাই গ্রহণ করতেন। শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী ও ফলাফলের বিষয়গুলো কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বিষয় হলেও বোর্ডের প্রতিনিধি হিসেবে এডি জহুরুল ইসলাম আগ বাড়িয়ে সব কিছু নির্ধারণ করে দিতেন।
গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে এমপিও কমিটির সভাপতি সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানের লিখিত অনুমোদিত নোটিশে সভা আহবানের মাধ্যমে কারিগরি বোর্ড, মাদ্রাসা বোর্ড, ও আরবি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমপিও রিভিউ আবেদন করা সকল প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ তথ্য চাওয়া হয় এবং সেই মোতাবেক বোর্ড হতে তথ্য সমূহ প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে তথ্যসমূহে কিছু অসামঞ্জস্যতা দেখা দিলে পুনরায় ১৮ আগষ্ট ২০২১ ইং তারিখে মন্ত্রণালয়ে আরও একটি সভার মাধ্যমে নথিগত কিছু বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেমন ২০১৮ সালের পূর্বে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক পাঠদানের অনুমতি থাকলে আলাদা করে স্বীকৃতির দরকার নেই এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরআইএফ-কে নির্বাচন করা হয়। পরবর্তীতে চুড়ান্ত রেজুলেশন করার সময় শিক্ষা মন্ত্রীর নির্দেশে রিভিউ কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সচিব মৌখিক নির্দেশ দিলে সেইভাবে সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হয়। কারণ হিসাবে জানানো হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রীকে কে বা কাহারা বলেছেন এই এমপিও রিভিউ কার্যক্রমে টাকার লেনদেন হচ্ছে তাই তিনি বন্ধ করতে বলেছেন।
মন্ত্রণালয়ের এসব কার্যক্রম এবং এমপিও রিভিউ সংক্রান্ত স্বেচ্ছাচারিতা ও অদক্ষতায় সাধারণ শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কোন দূর্নীতি হয়ে থাকলে সেই দূর্নীতির সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় এনে কার্যক্রমকে স্বচ্ছ করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা।
এ জাতীয় আরো খবর…