চট্টগ্রামে পথ হারানো এক কিশোরীকে একটি পরিত্যাক্ত ঘরে আটকে রেখে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ বলেছেন, নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় পথহারা কিশোরীকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সীতাকুণ্ডের কালুশাহ মাজার এলাকায় গহীন জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে তারা। পরদিন সকালে তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ ফোন মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ঘটনার শিকার হন প্রায় ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরি। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করে নগরীর ডবলমুরিং থানা পুলিশ।
গ্রেফতার তিনজন হলো- গাড়ি চালক মো.মেহেদী হাসান ওরফে মুন্না (১৯), মো. মাকিব (২১) ও মো. হাসান তারেক রনি (৪১)।
এর আগে ভিক্টিমের বোন বাদি হয়ে ডবলিমুরিং থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামেন ডবলমুরিং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অর্নব বড়ুয়া ও তার ফোর্স।
পুলিশ জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর ভিকটিম তার ফুফাতো ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে ডাক্তার দেখানোর জন্য বাসা থেকে বের হয়। পথে একটি লেগুনা গাড়িতে ভিকটিম ও তার ভাবী উঠার চেষ্টা করে। কিন্তু অসর্তকতাবশত ভিকটিম গাড়িতে উঠতে না পারলে গাড়িটি তাকে পথে রেখেই গন্তব্যের দিকে ছুটে যায়। ভিকটিম একা একা আগ্রাবাদ সিএন্ডএফ টাওয়ারের সামনে কান্নাকাটি করতে থাকলে প্রধান আসামি মেহেদী বিষয়টি খেয়াল করে। পরে সে ভিকটিমের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে তাকে বাসায় পৌঁছে দিবে বলে তার গাড়িতে উঠায়। সরল বিশ্বাসে ওই কিশোরী মেহেদীর গাড়িতে উঠলে তাকে সীতাকুণ্ডের কালুশাহ মাজার এলাকায় গহীন জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পরিত্যাক্ত ঘরে আটকে রেখে মেহেদী তার অপর দুই বন্ধুকে নিয়ে কিশোরীকে র্ধষণ করে। পরের দিন সকালে আসামি মেহেদী কিশোরীকে তার মনসুরাবাদের ঠিকানায় পৌঁছে দিয়ে ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। কিশোরী এই ঘটনা অনেকদিন পরিবারের কাছ থেকে গোপন রাখে।
কিন্তু পর কিশোরীর শারীরিক অসুস্থতাসহ নানা লক্ষণ দেখা দিলে পরিবারের সদস্যরা তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে একসময় সে তার সাথে পাশবিক ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে কিশোরীকে তার পরিবার ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথে মনসুরাবাদ এলাকায় পৌঁছালে ঘটনাচক্রে মূল আসামি মেহেদীকে দেখতে পায়। পরে কিশোরীর বোন ও তার স্বজনরা মেহেদীকে আটক করে ৯৯৯-এ ফোন করলে ডবলমুরিং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও দুই অভিযুক্ত ধর্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, পথহারা কিশোরীকে সীতাকুণ্ডের কালুশাহ মাজার এলাকায় একটি ঘরে আটকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে আসামিরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানান তিনি।
এমকে