
বিশেষ প্রতিবেদক->>
করোনার মাহামারিতে সারাদেশে ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর রোববার ফেনীতে চালু হয়েছে সরকারী-বেসরকারী অন্তত ৮৯০টি প্রতিষ্ঠান। প্রথম দিন উৎসব মুখর পরিবেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রসাগুলোতে ক্লাস শুরু হলেও জেলায় চালু হয়নি অর্ধশতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল।
ফেনী সরকারী কলেজে অধ্যক্ষ বিমল কান্তি পাল জানান, করোনা অতিমারীর কারণে কলেজে প্রবেশের মুখে শিক্ষার্থীদের যন্ত্রের মাধ্যমে তাপমাত্রা মাপা ও সাবান পানি দিয়ে হাত-ধোয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো হয়।
ফেনী সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাক্ষাতে এক আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে বরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়ে বেসিন বসানো হয়েছে। প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রয়েছে।প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে মাস্ক-হ্যান্ডস্যানিটাইজার নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফেনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত নাথ বলেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা ভিন্নমুখী হয়ে পড়েছিল। স্কুল খোলাতে তারা মূলধারায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। মাস্ক ছাড়া কাউকেই বিদ্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। যারা মাস্ক ছাড়া এসেছে তাদেরকে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাস্ক দেয়া হয়েছে।
ফেনী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্যাহ জানান, রোববার জেলায় ২শটি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৫টি কলেজ, ২০টি মাদ্রাসা ও ৫৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হয়েছে।
এদিকে ফেনী জেলা কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম মামুনুর রশিদ জানান, ফেনীতে প্রায় তিনশো কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। করোনার ছোবলে এর অধিকাংশের অবস্থা শোচনীয়। উদ্যোক্তারা ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, করোনার কারণে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে আলহ্বাজ শামছুল হক ভূঞাঁ আদর্শ একাডেমি, শিক্ষা নিকেতন ইনস্টিটিউট, ইস্ট ওয়েস্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, পাগলা মিয়া সড়কে প্রাইম আইডিয়াল একাডেমি, সৃজনী গ্রামার স্কুলসহ অন্ত অর্ধশতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এছাাড়া জেলায় আরও ১৫০টি কিন্ডারগার্টেনের অবস্থা নিবু নিবু। বেকার হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি শিক্ষক।
ফেনী শহরের কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ ও ফেনী জেলা কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল বারেক বলেন, তার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলো। এর মধ্যে একটি ৭ তলা ভবনের আবাসিক স্কুল। করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আবাসিক ক্যাম্পাস আর রাখা সম্ভব হয়নি। ক্রমাগত আর্থিক ক্ষতির কারণে বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বাড়িভাড়া বেশ কয়েক লাখ টাকা বাকি পড়েছে।
প্রাইম আইডিয়াল স্কুলের উদ্যোক্তা তাজ উদ্দিন পলাশ জানান, করোনার কারণে শিক্ষার্থী কমে যাওয়াসহ দুই লাখ টাকারও বেশি আর্থিক ক্ষতি হওয়ার পর স্কুলটি কোনোভাবেই টিকিয়ে রাখা যায়নি, বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
Sharing is caring!