উপরে বর্ণিত নিষিদ্ধ সময়গুলোর মধ্যে কিছু বিশেষ অবস্থায় নামাজ আদায় করার বৈধতা রয়েছে। এই মতটি অনেক ফিক্হবিদের কাছে গ্রহণযোগ্য।
ক. কাজা নামাজ: কেউ যদি নামাজ ভুলে যায় বা ঘুমিয়ে পড়ার কারণে তার ফরজ নামাজ কাজা হয়ে যায়, তবে সেই নামাজ নিষিদ্ধ সময়েও স্মরণ হওয়া মাত্র আদায় করা যাবে।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, “কেউ যদি নামাজ ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে থাকে, তবে যখনই তার মনে পড়বে, সে যেন তা আদায় করে নেয়। এর কোনো কাফফারা নেই, কেবল এটিই তার কাফফারা।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৯৭)
খ. তাহিয়্যাতুল মসজিদ: মসজিদে প্রবেশ করার পর বসার আগে দুই রাকাত ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ নামাজ মসজিদে ঢোকার আদব হিসেবে পড়া মোস্তাহাব। অনেকের মতে, এটি নিষিদ্ধ সময়েও পড়া বৈধ।
কেননা, নবীজি (সা.) বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে, তখন সে যেন দুই রাকাত নামাজ না পড়ে না বসে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৪৪)
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, জুমার দিন নবীজি (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে বসে পড়লেন। নবীজি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি দুই রাকাত নামাজ পড়েছ?” সে বলল, “না।” তিনি বললেন, “তাহলে উঠে দুই রাকাত সংক্ষিপ্ত নামাজ পড়ে নাও।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৪৩)
শরীয়তে নফল নামাজকে উৎসাহিত করা হলেও, কিছু নির্দিষ্ট সময়ে নফল নামাজ বর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ একাগ্রতা নিশ্চিত করার জন্য। এই নিষেধাজ্ঞা মূলত সাধারণ নফল নামাজের জন্য প্রযোজ্য।
তবে কাজা নামাজ এবং তাহিয়্যাতুল মসজিদের মতো কারণযুক্ত নফল নামাজ নিষিদ্ধ সময়েও আদায় করা যায়, যা এই নিষেধের সাধারণ বিধান থেকে ব্যতিক্রম।


