
আড়াই কোটি টাকার মার্কেট
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার রামগতি বাজারে এক ভবনে স্বাস্থ্যসম্মত আধুনিক কাঁচাবাজার, মাছ বাজার, মুদি ও অন্যান্য বিপণিকেন্দ্র চালুর লক্ষ্যে রামগতি বাজার মার্কেট ভবনটি উদ্বোধন হয়েছে ২০২৩ সালের জুন মাসে। দ্বি-তলায় ১৩টি দোকান বরাদ্দ রয়েছে, তবে দুই বছরেরও চালু হয়টি মার্কেটের দোকানগুলো। পড়ে রয়েছে তালাবদ্ধ অবস্থায়। ব্যবহৃত না হওয়ায় ভবনের কক্ষগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। এতে করে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সরকারের (জিওবি) অর্থায়নে ওই দ্বিতলা মার্কেট ভবন নির্মানের কাজ ২০২০ সালে জুনে শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কার্যাদেশ অনুযায়ী নির্মান কাজটি সমাপ্তি হয় ২০২৩ সালের মে মাসে।
সম্প্রতি মার্কেটটি ঘুরে দেখা গেছে, নিচতলায় মাছ ও কাঁচাবাজারের জন্য উঁচু শেড তৈরি করা হয়েছে। সবজি, মাছ, মাংস, মুরগি, মুদি, শুঁটকি, ডিম, বীজের দোকান যে যার মত করে বসে আছে। কিছু কিছু জায়গায় বস্তা রেখে জায়গা দখল করে আছে। নেই শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। দ্বিতীয় তলায় কোনো দোকানই চালু হয়নি। ১৩টি দোকান তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। মার্কেটের সামনে মাংসের দোকান। যে যার মত করে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, নেই কারো তদরকি। পরিকল্পনা অনুযায়ী মার্কেটের নিচতলায় কাঁচাবাজার বসানো হয়নি।
বাজারের ব্যবসায়ী মো. নাঈম জানান, তরকারি দোকানদাররা অর্ধেক মার্কেটের মধ্যে, অর্ধেক বাজারের রাস্তা দখল করে দোকানদারি করছেন। এতে করে পথচারিরা পড়ছেন বিড়ম্বনায়, অন্যদিকে বাড়ছে যানজট। এ যেন দেখার কেউ নাই।
নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, ইউএনও’র সদিচ্ছা না থাকায় এভাবে পড়ে আছে বছরের পর বছর। আড়াই কোটি টাকার মার্কেটটিতে সঠিকভাবে অর্থের ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি বলেও অভিযোগ তাদের।
কলেজ শিক্ষার্থী মো. সাবিদ জানান, বাজারের মার্কেটটি চালু না হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যে যার মত ব্যবসা পরিচালনা করছে। এতে করে বাজারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তদারকির অভাবে কেউ কাউকে মানছেন না। দ্রুত ভবনটি চালু হওয়ার দাবী জানাই।
ওই মার্কেটের নিচে বসা বীজ ব্যবসায়ী কালাম মিয়া জানান, পেটের তাগিদে এখানে বসেছি। বাজার কমিটি যে সিদ্ধান্ত দেন তাই মেনে নেব।
রামগতি বাজার উন্নয়ন কমিটির সদস্য গরীব হোসেন রাসেল জানান, ভবনটি উদ্বোধনের পর পরই আমরা রামগতি বাজারের শতাধিক দোকানদার দ্বি-তলার দোকানগুলো ভাড়া পাওয়ার জন্য আবেদন করি। কিন্তু দুই বছরেরও অধিক সময় হলেও কেউ এখন পর্যন্ত ভবনের অব্যবহৃত কক্ষগুলো বরাদ্দ পায়নি।
বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও বাজার উন্নয়ন কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. মিজানুর রহমান বলেন, জায়গা সীমিত হওয়ার কারণে বাজারে সু-শৃঙ্খল পরিবেশ নেই। তবে, মার্কেটটি পুরোপুরি চালু হলে অনেকটা ঠিক হয়ে যাবে। ভবনটি চালু করার জন্য ইউএনও মহোদয়কে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এনজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) কার্যাদেশ অনুযায়ী নির্মান কাজটি শেষ করে ২০২৩ সালের জুনে আমরা ডিসি মহোদয়ের কাছে হস্তান্তর করেছি। মার্কেটটি কেন পুরোদমে চালু হচ্ছে না তা আমার জানা নেই। তবে চালু হলে রাজস্ব পাবে সরকার। মার্কেট ভবনের দোকান ঘরগুলো ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়া ইউএনও মহোদয়ের কাছে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, মার্কেটটির গুরুত্ব বাড়ুক। এরপর একসময় দেওয়া হবে আবেদনকৃতদের মধ্যে বরাদ্দ।

