সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যদের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদ ও ভিডিও ধারণের মুখে বিএসএফ সদস্যরা অবশেষে বাংলাদেশের সীমান্ত ত্যাগ করে ভারতে ফিরে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, সকালে বিএসএফের চার সদস্য স্পিডবোটে করে সুরমা নদী পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। এরপর তারা কৃষকদের ফসল রক্ষায় তৈরি বাঁধের অংশ হিসেবে স্থাপন করা বাঁশের খুঁটি উপড়ে ফেলতে শুরু করেন।
স্থানীয় কয়েকজন এ দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকেন এবং বিএসএফ সদস্যদের উদ্দেশে প্রশ্ন তোলেন—
“এটি বাংলাদেশের মাটি, আপনারা কেন সীমান্ত অতিক্রম করে এখানে এসেছেন? কার নির্দেশে বাঁশের খুঁটি তুলছেন?”
ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে বিব্রত বিএসএফ সদস্যরা কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে স্পিডবোটে চড়ে ভারতের দিকে ফিরে যান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘটনাস্থল বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অংশ। ভারতের সীমানা নদীর অপর পাড়ে অবস্থিত, ফলে বিএসএফের সেখানে প্রবেশের কোনো এখতিয়ার নেই। তারা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা ফসল রক্ষায় নদীর পাড়ে বাঁশের বেড়া তৈরি করেছিলেন— সেটিই বিএসএফ সদস্যরা অপসারণের চেষ্টা করেন।
মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আব্দুস শহীদ বলেন,
“আমি ফেসবুকে ভিডিওটি দেখেছি। ঘটনাস্থল সুরমা নদীর তীরে— একপাশে ভারত, অন্যপাশে জকিগঞ্জের রসুলপুর। স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে বিএসএফ সদস্যদের চলে যেতে দেখা গেছে। তবে কেউ আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানায়নি।”
এ বিষয়ে ১৯ বিজিবি জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার বলেন,
“আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। বিএসএফ সদস্যরা সত্যিই বাংলাদেশের অংশে প্রবেশ করেছিল। পরে স্থানীয়দের প্রতিবাদে তারা ফিরে যায়। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজিবি বিষয়টি বিএসএফ কর্মকর্তাদের জানায় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিএসএফকে সতর্ক করা হয়েছে।”
এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে। স্থানীয়রা বিষয়টিকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি চরম অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন এবং সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।

