সিলেটের জৈন্তাপুরে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের রবি মৌসুমে বসতবাড়ি ও মাঠের চাষযোগ্য জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহ দিতে সার ও বীজ বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর ) সকাল ৯টায় উপজেলা কৃষি অফিস প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শতাধিক কৃষক-প্রাণের
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জর্জ মিত্র চাকমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) দেবল সরকার। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা আক্তার এবং সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার নুরুল ইসলাম খান।
কর্মসূচির আওতায় মোট ৫৪০ জন কৃষক পেয়েছেন সবজি বীজ ও সার, ৪০০ জন কৃষক পেয়েছেন শুধুমাত্র সবজি বীজ, আর গম ও সরিষা ফসলের বীজ পেয়েছেন ৫৭০ জন কৃষক। এ উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমে আসবে এবং রবি মৌসুমে মাঠে বহুমুখী ফসলের আবাদ বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, কৃষকই আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি। সরকারের এই প্রণোদনা কর্মসূচি কৃষকদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলবে এবং দেশের সামগ্রিক খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি আরও যোগ করেন, জৈন্তাপুরের প্রতিটি গ্রামকে উৎপাদনশীল করে তোলার জন্য প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ সর্বদা কৃষকদের পাশে থাকবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা আক্তার বলেন, আমরা চাই প্রতিটি ইঞ্চি জমি যেন কাজে লাগে। বসতবাড়ির আঙিনাতেও সবজি চাষে নারীরা যুক্ত হলে পরিবার হবে পুষ্টিসম্পন্ন এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী।
অনুষ্ঠানে বক্তারা সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ এবং প্রণোদনা কার্যক্রমের সুফল সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তারা জানান, কৃষকরা যাতে সময়মতো সার-বীজ পায় এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে, সে লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিস সর্বদা পরামর্শ ও সহায়তা দেবে।
কৃষকদের মুখে ছিল উৎসাহ ও কৃতজ্ঞতার ছাপ। তারা জানান, এই প্রণোদনা পেলে তাদের ফসল চাষে গতি আসবে এবং অতিরিক্ত উৎপাদনের মাধ্যমে বাজারেও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।
সার্বিকভাবে অনুষ্ঠানে এক অনুপ্রেরণাদায়ক পরিবেশে কৃষক, কর্মকর্তাসহ উপস্থিত সকলে সরকারের কৃষি উন্নয়ন উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেন।
শেষে সঞ্চালক নুরুল ইসলাম খান বলেন, এই প্রণোদনার লক্ষ্য শুধু বীজ বা সার বিতরণ নয়, বরং টেকসই কৃষি ব্যবস্থার ভিত্তি গড়ে তোলা। কৃষক ও কৃষির উন্নয়নই আমাদের মূল অঙ্গীকার।
রবি মৌসুমের এই প্রণোদনা শুধু কৃষকদের মুখে হাসি ফোটাবে না, বরং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এমনই প্রত্যাশা জানালেন জৈন্তাপুরের কৃষক ও কৃষিবিদরা।