বিএম কলেজে ৩২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য হলে আসন মাত্র ১১০০

বিএম কলেজে ৩২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য হলে আসন মাত্র ১১০০

১৯ October ২০২৫ Sunday ১:২৬:৩৬ PM

Print this E-mail this


নিজস্ব প্রতিনিধি:

বিএম কলেজে ৩২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য হলে আসন মাত্র ১১০০

দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে ৩২ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। কিন্তু কলেজের ছয়টি হলে থাকার ব্যবস্থা আছে মাত্র ১ হাজার ১০০ জন শিক্ষার্থীর। আবাসিক হলগুলোর অধিকাংশই জরাজীর্ণ ও আসন সংখ্যার দ্বিগুণ শিক্ষার্থী থাকছেন। নতুন বিভাগ যুক্ত হয়েছে শিক্ষার্থী বেড়েছে কিন্তু ৩৭ বছরে হয়নি নতুন কোন হল।

শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ নগরীর বিভিন্ন মেসে থেকে পড়াশোনা করেন। অথচ কলেজের নিজস্ব সম্পত্তি থাকার পরও আবাসন সংকট সমাধান হচ্ছে না।

কলেজ সূত্র জানায়, ৫৮ একর জমির ওপর নির্মিত ব্রজমোহন কলেজ দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২২টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও ২১টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর চালু রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বরিশালের বাইরে থেকেও বিশেষ করে সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফরিদপুর থেকে অনেক শিক্ষার্থী এসে এখানে পড়াশোনা করেন। বিশাল এই শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই রয়েছেন আবাসন সংকটে। হল গুলোর গুলোর অনেক কক্ষে ফ্যান বা লাইট নেই, টয়লেট ও পানির সমস্যাও আছে। ।

১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত সার্জেন্ট ফজলুল হক (মুসলিম) হলে ১৫০ বিপরীতে থাকেন ৩০০ জনের মত শিক্ষার্থী। বর্তমানে কিছু রুম পরিত্যক্ত। ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত মহাত্মা অশ্বিনী কুমার (ডিগ্রি) হলে ৩৫০ আসনের বিপরীতে থাকনে ৮০০ জনের মত শিক্ষার্থী। এই হলে এ ব্লকের অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে ২০০ জনের মত শিক্ষার্থী থাকে।সেখানে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কবি জীবনানন্দ দাশ (হিন্দু) হলে আসন সংখ্যা ১৫০ বিপরীতে থাকেন ২৫০জনের মত শিক্ষার্থী। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বনমালী গাঙ্গুলী মহিলা হলে ৪০০ আসনের বিপরীতে থাকেন ৭৫০ জনের মত শিক্ষার্থী। সুরেন্দ্র ভবনে ৩০ আসনের বিপরীতে থাকেন ৪০ জন শিক্ষার্থী ও নৃপেন্দ্র ভবনে থাকেন ২০ জনের মত শিক্ষার্থী। এছাড়া বাতিল করা হয়েছে দেবেন্দ্র ভবন হল।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, হলে জায়গা না পেয়ে তারা মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন, যা অতিরিক্ত খরচের পাশাপাশি নিরাপত্তা ও পড়াশোনায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাছাড়া হলগুলোর অনেক রুম পরিত্যক্ত। কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

বিএম কলেজ ছাত্রদল নেতা ওয়ালিদ বিন সালাউদ্দিন বলেন, আমাদের হলগুলো অনেক পুরানো হওয়ায় অধিকাংশই জরাজীর্ণ। অনেক ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকছেন শিক্ষার্থীরা। আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালেয় ক্লাসে উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল না কিন্তু বর্তমানে ৬০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হয় নয়তো পরীক্ষা অংশগ্রহন করতে দেয়া হয় না। এখন নিয়মিত ক্লাস করতে হয় তাই বরিশালের বাহিরে থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের শহরে থাকা বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। হলে থাকার আসন নাই। বহু শিক্ষার্থীর সামর্থ্য নাই মেসে থাকার। আমরা সব ছাত্রসংগঠন একসাথে অধ্যক্ষ স্যারের কাছে নতুন হল নির্মানের দাবী জানিয়েছি। কিন্তু কোন দৃশ্যমান প্রকল্প দেখছি না।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, আবাসন সংকট দীর্ঘ দিনের। নতুন হলের দরকার। পুরানো হলগুলো সংস্কার দরকার। শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর বারবার আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। আমি ঢাকায় গিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তেরে প্রধানের সাথে দেখা করে সমস্যার কথা বলেছি তিনিও আশ্বাস দিয়েছেন।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts