
মোহাম্মদ আলী : স্কুলের আড়ালে বেনুয়ার চর এমএইচ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কোচিং বাণিজ্য ছিল রমরমা। ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীকে বাধ্যতামূলক কোচিং করতে হতো তার কাছে। এমন কি পড়লেও না পড়লেও দিতে হতো কোচিং ফি। তা আবার তার ইচ্ছা মতো। কোনো ছাত্র-ছাত্রী পড়তে না চাইলে তাকে ও তার অভিভাবকদের ডেকে অপমান অপদস্ত করতেন তিনি!
গত রোববার, জেলার ইসলামপুর উপজেলাধীন বেনুয়ার চর এমএইচ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, নুরে আলম শাহীনের পদত্যাগের দাবিতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী অভিভাবকরা এমন অভিযোগ করেছেন।
এদিন শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকাবাসী জানান, প্রধান শিক্ষক নুরে আলম শাহীন একজন চতুর ধূর্তবাজ প্রকৃতির লোক। শিক্ষতার আড়ালে তিনি একজন রক্ত চুষা বণিক। তিনি তার স্বার্থের জন্য সবকিছু করতে পারেন। ২০২০ সালে তিনি তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং চরপুটিমারি ইউপি চেয়ারম্যান, সামছুজ্জামান সুরুজ মাষ্টারকে বাপ বানিয়ে তার হাতে পায়ে ধরে সিনিয়রকে টপকিয়ে প্রধান শিক্ষক হন। তারপর থেকেই স্কুলকে বাপের সম্পদ মনে করে ইচ্ছে মতো ভোগ করে আসছেন। স্কুলের আড়ালে কোচিং বাণিজ্য ছিল তার বড় ব্যবসা। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে স্কুলকে তিনি কোচিং সেন্টারে রূপান্তর করেন। আর সে কোচিং সেন্টারের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়া বাধ্যতামূলক করেন। পড়লেও তাকে টাকা দিতে হতো না পড়লেও দিতে হতো। কোনো ছাত্র-ছাত্রী যদি না পড়তে চাইত তাহলে তাকে ও তার অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে তিনি অপমান অপদস্ত করতেন।
এভাবেই সে গরীবের রক্ত চুষে প্রতিমাসে কামিয়ে নিত এক দেড় লাখ টাকা।
কিন্তু, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের আরেকজন শিক্ষক, মোঃ হযরত আলী স্কুলের ছেলে মেয়েদের প্রাইভেট পড়াতে শুরু করলে প্রধান শিক্ষকের মাথায় বাজ পড়ে। তার ব্যবসায় ধস নামে। এমতাবস্থায় তিনি ওই শিক্ষককে ডেকে নিয়ে প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু, শিক্ষক হযরত আলী তার হুকুম মানতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে মারামারি বাধে।
আর বিদ্যালয়ের এই দুই শিক্ষকের গর্হীত আচরণের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর। তারা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে।
এতে করে বেনুয়ার চর এমএইচ উচ্চ বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সুনাম বুলুণ্ঠিত হয়েছে এবং মিডিয়ার মাধ্যমে এর বদনাম সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
এব্যাপারে শিক্ষক হযরত আলীর দাবি, প্রধান শিক্ষক শুধু তার গায়ে হাত তুলেননি। এর আগেও সিনিয়র শিক্ষক অরুণ মোদক ও ইংরেজি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন এর গায়েও হাত তুলেছেন। লাঞ্ছিত করেছেন শিক্ষিকা নাসরিন সুলতানাকেও।
তবে, নিজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, বেনুয়ার চর এমএইচ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরে আলম শাহীন।