বাসাইল প্রতিনিধিঃ কারারক্ষী হেফাজতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার কাশিল পূর্বপাড়া ঈদগাহ মাঠে নামাজে যানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এসময় তার আত্মীয়স্বজন, এলাকার লোকজন ও বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এরআগে গত শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কারারক্ষী হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মিজানুর রহমান মিজান কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া বাসাইল উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি উপজেলার কাশিল পূর্বপাড়া এলাকা বাসিন্দা। যুবলীগ নেতা হলেও তার বিরুদ্ধে ট্রেন্ডারবাজি, জমি দখল বা কোথাও চাঁদা তোলার অভিযোগ শোনা যায়নি। মিজানের পরিবারে চলছে আহাজারি। একমাত্র উপার্জক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে মিজানের পরিবার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় চার মাস আগে বাসাইল থানা পুলিশ কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুরকে নাকাছিম এলাকা থেকে আটক করে। পরে তাকে ৫ আগস্টের পর হওয়া টাঙ্গাইল সদর থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। আদালতে পাঠানোর পর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর মিজান অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেসময় তাকে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কারারক্ষী হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। মিজান দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভূগছিলেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জজ আদালতে তার জামিন শুনানি ছিল। সেসময় গুরুতর অসুস্থজনিত বিভিন্ন কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবি মিজানের অসুস্থজনিত বিষয়টি সামনে এনে জামিনের জন্য জোর দাবি জানালেও কাজ হয়নি। আগামী ৭ অক্টোবর তার পরবর্তী জামিন শুনানির তারিখ ধার্য ছিল।
মিজানুর রহমান মিজানের স্ত্রী শাহিদা বেগম বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের শিকারে আমার নির্দোষ মিজানকে চার মাস ১০দিন জেল খাটায়। অসুস্থতার অনেক কাগজপত্র আমি আদালতে জমা দিয়েছিলাম। মিজানের চোখে অপারেশন ছিল, হার্ট ও কিডনি এবং ডায়াবেটিসসহ নানা রোধে আক্রান্ত ছিল। এত কাগজপত্র আদালতে দেওয়ার পরও বিচারক আমার মিজানকে জামিন দেয়নি। বার বার জামিন শুনানি হলেও জামিন দেয়নি। হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলা রয়েছে। হাসপাতালে মিজানকে দেখার জন্য দায়িত্বরত কারারক্ষীদেরও টাকা দিতে হয়েছে।’
নিউজ টাঙ্গাইলের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন
–
“নিউজ টাঙ্গাইল”র ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।