দুই বছর পর আমি অন্য বাসায় চলে যাই, যদিও খুব দূরে নয়। হঠাৎ একদিন খবর এল, ভাবি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। সেদিন অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। মৃত্যুশয্যায় বসে তিনি আমাকে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন আমাকে জানানো হয়নি। মীম-নুনও ছোট; ওদের পক্ষে বলা সম্ভব হয়নি। সেদিনই ছিল ভাবির জীবনের শেষ দিন। রাত তিনটার দিকে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভোর পাঁচটায় খবর পেয়ে আমি ছুটে যাই। ঘরে নিথর হয়ে পড়ে আছে ভাবির দেহ। মীম আর নুন পাগলের মতো কাঁদছে। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার বদলে নিজেই ভেঙে পড়ি। ১৫ বছর ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন তিনি।
এরপর আমি বরিশালে চলে আসি। ধীরে ধীরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন তো ঘরে ঘরে মোবাইল ফোন ছিল না। কিন্তু মীম আর নুনকে আজও ভুলতে পারিনি। কোনো রক্তের সম্পর্ক না, তার চেয়েও গভীর এক অপার ভালোবাসার বন্ধন।
জানি না, ওরা কত বড় হয়েছে! হয়তো আমাকে চিনবেও না, মনে রাখেনি বহু বছর আগের কথা। তবু আমার স্মৃতিতে ওরা অমলিন। মাঝেমধ্যে সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে ভেতরটা কেঁপে ওঠে।
মীম আর নুনের জন্য অফুরন্ত দোয়া ও ভালোবাসা।