নয়াদিল্লি, ৩০ সেপ্টেম্বর – ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত করেছেন লাদাখের আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ‘লেহ অ্যাপেক্স বডি’ দাবি করেছে, যতক্ষণ না পর্যন্ত ২৪ সেপ্টেম্বর লেহতে চার যুবক নিহত হওয়া নিয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হচ্ছে ও ৫০ জনেরও বেশি গ্রেফতারকৃত প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা আলোচনায় বসবে না।
তারা আরও জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অধিকারকর্মী সোনাম ওয়াংচুককে গ্রেফতার, রাজ্যের দাবিতে চলা প্রতিবাদকে ‘দেশবিরোধী’ বলা ও সেপ্টেম্বর ২৪-এ পুলিশের গুলিতে যুবকদের মৃত্যুর ঘটনা পরিপ্রেক্ষিতে তারা ৬ অক্টোবর দিল্লিতে আলোচনায় অংশ নেবে না।
লেহ এপেক্স বডি মূলত বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ লেহ শহরের বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের জোট। তারা আরও জানিয়েছে, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে ও ২৪ সেপ্টেম্বর লেহতে চারজনের প্রাণহানির বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে হবে। আর সেই তদন্তের দায়িত্ব দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত কোনো বিচারপতিকে।
অবশ্য রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সরকার জানিয়েছে, তারা সবসময় লেহর এপেক্স বডি ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে লাদাখ নিয়ে সংলাপের জন্য উন্মুক্ত অবস্থান বজায় রেখেছে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে লাদাখের রাজধানী লেহ শহরে বিক্ষোভে নেমেছিলেন কয়েক হাজার তরুণ-তরুণী। অনেকে আবার অনশনে বসেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই লেহতে বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। শুধু তাই নয়, পার্টি অফিসের সামনে থাকা একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। তারপরই মূলত পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হয়।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এই আন্দোলনে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে সোনাম ওয়াংচুককে গ্রেফতার করা হয়। তাকে বর্তমানে রাজস্থানের জোধপুর জেলখানায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তদন্তে তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোগ উঠে এসেছে। লাদাখের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, ওয়াংচুক পাকিস্তান সফর করেছিলেন ও একজন পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে তার সংযোগ পাওয়া গেছে।
লাদাখ পুলিশ প্রধান এস.ডি. সিংহ জামওয়াল বলেন, আমরা সম্প্রতি একজন পাকিস্তানিকে গ্রেফতার করেছি, যিনি ওয়াংচুকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল ও তথ্য পাঠাচ্ছিল। আমাদের এই সম্পর্কে রেকর্ড আছে। ওয়াংচুক পাকিস্তানে ‘ডন’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশেও গিয়েছেন। তার প্রতি আমাদের বড় প্রশ্নচিহ্ন আছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওয়াংচুক। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তার প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে কোনো অর্থ আনত না। তবে জাতিসংঘ, সুইস ও ইতালীয় বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে তারা বাণিজ্যিক লেনদেন করেছেন। যেগুলোর সব ট্যাক্সও তারা দিয়েছেন।
সূত্র: জাগো নিউজ
এনএন/ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫