আবদুল্লাহ ইবনে মুকাফফা কেবল সাহিত্যেই নয়, গণিত ও যুক্তিশাস্ত্রেও পারদর্শী ছিলেন। সিন্ধ হিন্দ এবং ইউক্লিডের গ্রন্থও তিনি অনুবাদ করেছিলেন।
হারুনুর রশিদ ও বিশেষত মামুনুর রশিদের শাসনকালে জ্ঞানচর্চা ও অনুবাদ এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। আল মামুন গ্রিক দর্শন, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও গণিতের প্রতি গভীরভাবে আকৃষ্ট ছিলেন। সাম্রাজ্যের পণ্ডিতদের তিনি গ্রিক, ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের লেখা গ্রন্থাবলি সংগ্রহ করে বাগদাদে আনার নির্দেশ দেন।
তাঁর স্বপ্ন ছিল এমন এক জ্ঞানচর্চার পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে আলেমরা কেবল নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও গবেষণায় মগ্ন থাকবেন। ৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর এই স্বপ্ন আলো দেখল। নির্মিত হলো আরব জগতের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণাগার ও জ্ঞানকেন্দ্র-‘বায়তুল হিকমাহ’ বা হাউস অব উইজডম।
ইবনে নাদিম বর্ণনা করেছেন, আল মামুন স্বয়ং রোমান সম্রাটকে চিঠি লিখে তাঁর রাজ্যের প্রাচীন পুঁথিপুস্তক বাগদাদে পাঠানোর অনুরোধ জানান। প্রথমে রাজি না হলেও পরে রোমান সম্রাট সেই অনুরোধ রক্ষা করেন। সেসব বই অনুবাদের জন্য নিযুক্ত হন হাজ্জাজ বিন মাতার, ইবনে বিত্রিক, সালাম প্রমুখ।
তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন বহু তরুণ অনুবাদক। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বনু মুসা ভাতৃত্রয় (মুহাম্মদ, আহমদ ও আল হাসান)। গণিতের বই সংগ্রহের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে তাঁদের। আল মামুন হুনাইন বিন ইসহাককে রোমে পাঠান, যিনি সেখান থেকে কিছু দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ সংগ্রহ করে আনেন।