সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পানির ট্যাংকের পলেস্তারা খসে পড়ে হাসপাতালের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। সোমবার বেলা দুইটার দিকে মেডিকেল কলেজের শাহজালাল ছাত্রাবাসের বিপরীত দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. সুমন হোসেন। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে (চুক্তিভিত্তিক) কর্মরত ছিলেন। তিনি মাগুরার শ্রীপুরের বিলনাথুর এলাকার মো. ইসলাম হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সুমন হোসেন রোববার রাতের পালার দায়িত্বপালন শেষে সকাল ৮টার দিকে কাজ শেষ করেন। পরে বেলা দুইটার দিকে মেডিকেল কলেজের শাহজালাল ছাত্রাবাসের পাশে একটি চায়ের দোকানে গিয়েছিলেন। এ সময় সেখানে থাকা একটি পানির ট্যাংকের পলেস্তারা খসে সুমনের মাথায় লাগে। এতে তিনি গুরুত্বর আহত হন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে সুমন হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় বেলা তিনটার দিকে বিক্ষোভ করেছেন হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত কর্মচারীরা। পরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের ফটকে অবস্থান করে সুমনের মৃত্যুর ঘটনাকে অবহেলায় মৃত্যু দাবি করে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরী প্রাণহানির ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, বিষয়টি তিনি সিলেট গণপূর্ত বিভাগকে অবহিত করেছেন। পানির ট্যাংকটি পুরোনো। তবে পলেস্তারা খসে পড়ার ঘটনা আগে ঘটেনি। আজকের ঘটনার পর জায়গাটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ওই এলাকায় যাতে মানুষজন যাতায়াত না করেন, সে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গণপূর্ত বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
জিয়াউর রহমান চৌধুরী আরও বলেন, পানির ট্যাংকটি সচল রয়েছে। সেখান থেকে পানি মেডিকেল এলাকায় সরবারহ হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিলেট গণপূর্ত কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর বলেন, এ ধরনের স্থাপনা গণপূর্ত বিভাগ করে না। ওই পানির ট্যাংকটি পুরোনো। এটি কোন কর্তৃপক্ষ করেছিল, সেটি তাঁর জানা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানির ট্যাংক নির্মাণের কাজ করেছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এ ব্যাপারে সিলেট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল মজিদের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিহত সুমনের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।