জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে চাঁদপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাদ জুমা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চাঁদপুর শহর শাখার উদ্যোগে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়েছে। শহরের বাইতুল আমীন চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা লিয়াকত হোসাইন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চাঁদপুর শহর শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ নুরুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চাঁদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি আবুল বাকি, মাওলানা আবুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি নূরে আলম, সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আব্দুল কাদের, যুব মজলিসের আমেলা সদস্য মাওলানা শরীফ, শাহমামুদ ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু হুরায়রা, ছাত্র মজলিস জেলা শাখার সভাপতি হাফেজ ইসমাইল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা লিয়াকত হোসাইন বলেন, ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। অথচ আজও আমাদের দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে নামতে হয়। কারণ স্বৈরাচারের পতন হলেও গণমানুষের অধিকার এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
তিনি আরো বলেন, সরকারকে অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই সনদ জাতির মুক্তির সনদ। এটি উপেক্ষা করা হলে জাতীয় জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে। জুলাই সনদ কেবল রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র নয়; বরং এটি হতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, ইসলামি মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার সুস্পষ্ট রূপরেখা। পিয়ার পদ্ধতি সহ আমাদের ৫ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, আজকের বাংলাদেশ এক দুঃসহ সংকটকাল অতিক্রম করছে। প্রতিশ্রুত সংস্কারের কোনো কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি নেই, পরাজিত শক্তির বিচারের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ হয়নি, বরং জনগণের ভোটাধিকার হরণে নতুন চক্রান্ত চলছে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তির সংগ্রাম আজ এক ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে জাতির মুক্তি ও কল্যাণের জন্য বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জনগণের প্রাণের দাবিকে পাঁচ দফায় উপস্থাপন করেছে। এগুলো শুধু রাজনৈতিক দলীয় দাবি নয়; বরং শহীদদের রক্তে লেখা অঙ্গীকার, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের শপথ।ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়-স্বৈরাচার কখনো জনগণের ঢল থামাতে পারেনি। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের যে আকাঙ্ক্ষা মানুষ হৃদয়ে ধারণ করেছে, তা আর দমন করা যাবে না। এই দেশ গণমানুষের, কোনো স্বৈরশাসকের নয়। আসুন, আমরা সবাই মিলে এমন এক অদম্য গণজাগরণ তৈরি করি, যা পাঁচ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত থামবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চাঁদপুর শহর শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহমান, হাফেজ হেলাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ কারী রশিদ আহমদ, জেলা যুব মজলিসের সংগঠন বিভাগের সম্পাদক হাফেজ মুজাম্মেল হুসাইনসহ বাংলাদেশ খেলাফত মজলি, বাংলাদেশ যুব মজলিস এবং ছাত্র মজলিস চাঁদপুর জেলা শাখার বিভিন্ন ইউনিটের নেতা কর্মীরা।
উল্লেখ্য : বাংলাদেশ মজলিস ঘোষিত ৫ দফা দাবিগুলো হলো, ১. জুলাই সনদের অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন। ২. জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি চিরতরে নিষিদ্ধকরণ। ৩. আগামী নির্বাচনে প্রকৃত লেভেল-প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করা। ৪. জুলাই গণহত্যার বিচারের সুস্পষ্ট ও দৃশ্যমান প্রক্রিয়া শুরু করা। ৫. জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির বাস্তবায়ন।
আশিক বিন রহিম
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
এ জি