“সংখ্যালগু ও সংখ্যাগুরু নয়, আমরা সবাই বাংলাদেশী” এ প্রতিপাদ্যে উপর শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাথে জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টায় জেএম সেনগুপ্ত রোডস্থ মুনিরা ভবনের হলরুমে সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, এ বছর দুর্গোৎসবটা একটু চ্যালেঞ্জিং। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন সুন্দর ভাবে পূজা উদযাপনে আমরা যেন আপনাদের পাশাপাশি থাকি। আমরা চাঁদপুরে পূজা মন্ডপগুলোকে বিএনপির নেতৃবৃন্দকে দায়িত্ব ভাগ করে দেব। আর যে কোন প্রয়োজনে আপনারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
আপনারা আপনাদের আনন্দ ও উৎসব নির্ভিঘ্নে পালন করবেন। আপনারা পূজা করবেন, আর আমরা আপনাদের মন্ডপগুলো পাহাড়া দেব। সদর ও হাইমচরের মন্ডপগুলোতে আমি যাওয়ার চেষ্টা করবো।
তিনি আরো বলেন, আজকে যে মতবিনিময় এখানে কোন রাজনীতি নেই। সামনে জাতীয় নির্বাচন। আমরা মসজিদ, মন্দির গিয়ে কোন ধর্ম নিয়ে বিবেদ সৃষ্টি করতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশী, এটাই আমাদের বড় পরিচয়। সুন্দরভাবে যেন পূজা উদযাপন করা যায় সেই জন্য প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ কাজ করবে।
জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ কিছু সিধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সিধান্তগুলো হলো- জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দূর্গা পূজা উপলক্ষে ৫ দিনের জন্য কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হবে। কন্ট্রোল রুমে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকবে। কোন স্থানে কিছু হলে কন্ট্রোল রুমে জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূজা উপলক্ষে জেলা বিএনপির পরিদর্শন টিম গঠন করা হবে। সেই টিম বিভিন্ন উপজেলায় মন্ডপ পরিদর্শন করবে। পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা বাধ্যতামূল স্থাপন করকে হবে। দূর্গাপূজা নিয়ে কোন অবহেলা করা যাবে না।
চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, সিনিয়র সহ-সভাপতি নরেন্দ্র নারায়ন চক্রবর্তী, জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরেশ চন্দ্র মালাকার, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক গোপাল সাহা, মিনারর্ভা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রূপালী চম্পক, পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নেপাল সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুমন সরকার জয়, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, হাইমচর উপজেলা সভাপতি বিবো লাল মজুমদার, ফরিদগঞ্জ উপজেলা সভাপতি লিটন চন্দ্র দাস, মতলব উত্তর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শ্যামর চন্দ্র দাস, মতলব দক্ষিণ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার সাহা, শাহরাস্তি উপজেলার সভাপতি নিখিল চন্দ্র মজুমদার, কচুয়া উপজেলার ফনি ভূষণ মজুমদার তাফু, ঘোষপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির চন্দন কুমার ঘোষ।
পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দরা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের পূজা একটু কঠিন হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা, স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। আমরা স্বাধীন ভাবে নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে চাই। এ জন্য পূর্বের ন্যায় এবছরও বিএনপি আমাদের পাশে থাকবে বলে আশাবাদী। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর চাঁদপুর জেলা কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটেনি, তাই জেলা বিএনপি সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিককে ধন্যবাদ জানান পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন খান বাবুল, দেওয়ান মো. সফিকুজ্জামান, খলিলুর রহমান গাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মুনির চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ডি এম শাহাজাহান, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আক্তার হোসেন মাঝি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হারুনুর রশীদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজালাল মিশন, সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী ঢালী, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন বেপারী, মনিরা বেগম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ মোশারফ হোসাইন, প্রচার সম্পাদক শরীফ উদ্দিন পলাশ, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এবছর চাঁদপুর জেলায় পূজা মন্ডপ ২২৪টি। চাঁদপুর পৌর এলাকায় ৩৬টি, চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৬টি, হাইমচর উপজেলায় ৬টি, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২২টি, মতলব উত্তর উপজেলায় ৩৪টি, মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ৩৪টি, কচুয়া উপজেলায় ৩৮টি, শাহরাস্তি উপজেলায় ১৯টি, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ২৯টি।
প্রতিবেদক: মাজহারুল ইসলাম অনিক/ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫