বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. বরকত উল্ল্যাহ বুলু বলেছেন, একটি দল পিআরের নামে নির্বাচন বানচাল করতে চায়। অথচ পিআর কি তা এদেশের মানুষ জানেনা।দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা এদেশের গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি। আমরা অনেকে নিজের বাবার জানাজায় পর্যন্ত শরিক হতে পারিনি। আমাদের একে অন্যের সাথে দেখা হতো হয় রাজপথে না হয় কারাগারে। শুধু ৩৬ দিনের আন্দোলনে এদেশ স্বাধীন হয়নি। এই জায়গাটি দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে তৈরী করেছি আমরা।
১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে পৌর ও সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
বরকত উল্ল্যাহ বুলু আরো বলেন, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক চাঁদপুরে ১৭ বছর যে রাজনীতি করেছে আজকের এই সম্মেলন তার প্রতিফলন। দীর্ঘ দিন সে আপনাদের পাশে ছিলো এটি তার প্রমান। আপনারা আমাদেরকে মনোনয়নের কথা বলেছেন মনোনয়নতো আপনারা দিবেন। শেখ হাসিনা কেন পালিয়ে যেতে হয়েছিলো জানেন কারন তিনি হাইব্রিডদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।যারফলে তাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। সেই সাথে হাইব্রিডরাও পালিয়ে গিয়েছে। কাজেই জনগণের সাথে যাদের সম্পর্ক বিএনপি তাদেরকেই মনোনয়ন দিবে।।
তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে শেখ হাসিনা বলেছিলো জাতীয় পার্টির অধিনে যারা নির্বাচনে যাবে তারা জাতীয় বেইমান।অথচ এর ২ দিন পর তিনি জাতীয় পার্টির অধিনে নির্বাচনে গিয়েছিলো। বিএনপি ব্যতিত এই জামায়াতসহ সবাই সেদিন নির্বাচনে গিয়েছিলো। বেগম খালেদা জিয়া দেশকে ভালোবাসেন বহুবার তাকে চাপ দেওয়া হয়েছিলো এদেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য। তিনি বলেছেন বিদেশে আমার কোন ঠিকানা নেই এদেশ হলো আমার আসল ঠিকানা। আমি এখনোই এদেশকে ছেড়ে যাবো না। আজকে বেগম খালেদা জিয়া এদেশে আছেন অথচ শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জাতীর ঐতিহাসিক মূহুর্তে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিয়েছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি বলা হয়। তিনি এদেশকে তলা বিহীন জুড়ি থেকে একটি আধুনিক দেশের দিকে ধাবিত করেছিলেন। যার জন্য তিনি ১৯ দফা দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমান ও জিয়া পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকার কথা ছিলো। কারন আওয়ামী লীগকে পুনরোজ্জীবিত করে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।
বুলু বলেন, এমন কোন কর্ম আপনারা করবেন না। যেন আপনাদের সেই কর্মের কারনে মানুষ বিএনপিকে গালি দেয় আপনার নেতাকে গালি দেয়। আপনারা জানেন ১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন তিনি কিছু কাজ করেছিলেন যা জাতীর জন্য মাইলফলক। তিনি উপবৃত্তির ব্যবস্থা, বিনা মূল্যে বই দেয়া, বিনা বেতনে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া নারী শিক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি সেদিন ব্যাটের পথা চালু করেছিলেন। তিনি যদি সেদিন ব্যাটের ব্যবস্থা না করতো তাহলে আজকে সরকার কর্মচারীদের বেতন দিতে পারতো না।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রবাসী কল্যান বিষয়ক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোস্তাক মিয়া, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম, বিএনপি কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোশারফ হোসেন, মাহবুবুর রহমান স্বপন।
চাঁদপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. আক্তার হোসেন মাঝির সভাপতিত্বে এবং চাঁদপুর সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহজালাল মিশন ও পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. হারুনুর রশীদের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শফিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আব্দুল হামিদ মাস্টার, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুবুর আনোয়ার বাবলু, সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন খান বাবুল, দেওয়ান মো. সফিকুজ্জামান, শরীফ মো. ইউনুছ, এমএ শুক্কুর পাটওয়ারী, খলিলুর রহমান গাজী, ফেরদৌস আলম বাবু, ডিএম শাহজাহান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিমুস সালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জহির উদ্দিন বাবর, অ্যাড. মুনিরা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ মো. মোশারফ হোসাইন, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন, সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হযরত আলী ঢালী, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. জাকির হোসেন ফয়সাল, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বেপারী, শরীফ উদ্দিন পলাশ, সদর উপজেলা বিএপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. তাফাজ্জল হোসেন, আক্তার হোসেন সাগর, অ্যাড. জসিম মেহেদী।
আরো বক্তব্য রাখেন শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি স্বপন মাহমুদ, পৌর ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন খান, কল্যানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কাইউম মোল্লা, পৌর ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম সেকুল, শহর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদা রহমান সেতু, সদর উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নাছরিন রহমান, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক শাহজাহান কবির খোকা, সদর উপজেলা যুদলের আহ্বাক নজরুল ইসলাম নজু, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি জিসান আহমেদ, শহর ছাত্রদলের সভাপতি আতিকুর রহমান শিপন,সাধারন সম্পাদক ফয়েজ ঢালী প্রমুখ।
সম্মেলনে সদর উপজেলা বিএনপির বিগত দিনে মৃত্যুবরণকারী নেতৃবৃন্দের উপর শোক প্রস্তাব তুলে ধরেন সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহজালাল মিশন ও পৌর বিএনপির বিগত দিনে মৃত্যুবরন কারী নেতৃবৃন্দর উপর শোক প্রস্তাব তুলে ধরেন পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. হারুনুর রশীদ ।
সভার শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিন পাটওয়ারী।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। নতুন কমিটিতে পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি, সিনিয়র সহ-সভাপতি আফজাল হোসেন, সহ-সভাপতি আসহান উল্যাহ সেন্টু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হারুনুর রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির বেপারী, ইমান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ উদ্দিন পলাশ, শাহজালাল শেখ।
সদর উপজেলা বিএনপির নতুন সভাপতি শাহজালাল মিশন, সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাড. জাকির হোসেন ফয়সাল, সহ-সভাপতি আলমগীর আলম জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী ঢালী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন সাগর, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. তোফাজ্জল হোসেন ও অ্যাড. জসিম মেহেদী।
এর আগে পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ লাল ক্যাপ ও সদর উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ নীল ক্যাপ পড়ে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেন।
স্টাফ রিপোর্টার/ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫