চাঁদপুরে সম্ভাব্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার্থী ১৩ হাজার : কেন্দ্র ২২

চাঁদপুরে সম্ভাব্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার্থী ১৩ হাজার : কেন্দ্র ২২

চাঁদপুর জেলার ১ হাজার ১শ ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৮ জন। কেন্দ্র ২২ টি। এর মধ্যে বালক ৪ হাজার ৯শ ৪৮ জন এবং বালিকা ৮ হাজার ১ শ ২০ জন। এবারের সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় দুই-তৃতীয়াংশই বালিকা। তবে জেলার ৬শ ১০ টি কিন্ডার গান্টেন ও প্রায় ৪ শ ৫০ টি এবতেদায়ী মাদ্রাসার বৃত্তি পরীক্ষার্থীর তথ্য এর সাথে সম্পৃক্ত হয় নি।

এদিকে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্ভাব্য বৃত্তি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার ১শ ৭৯ জন। মোট কেন্দ্র ৭টি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেয়া ৮ সেপ্টেম্বর এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রাপ্ত প্রতিবেদনের তথ্য মতে – হাজীগঞ্জ উপজেলা সরকারি নির্দেশনা মতে ৪০ % হারে ১ হাজার ৮শ ৩০ জন । কেন্দ্র- ৩ টি। এর মধ্যে বালক- ৭শ ৩০ জন এবং বালিকা ১ হাজার ১শ জন। শাহরাস্তি উপজেলায় বালক ৪ শ ৮০ জন এবং বালিকা -১ হাজার ৩শ ৪৯ জন। কেন্দ্র ৪ টি।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পর আবারো ২০০৫ সালে ডিসেম্বরে পূর্বের ন্যায় চালু হতে যাচ্ছে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। এ বছরের ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা শেষে পৃথকভাবে এ বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে অংশ নেবে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বাছাই করা শিক্ষার্থীরা।

বৃত্তি পরীক্ষায় কোন শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে-তাদের কীভাবে বাছাই করা হবে এবং কত বিষয় ও কত নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে-এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এবার গুঞ্জন ছিল যে বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন বা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রেজিস্ট্রেশন করে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। তবে সেই সুযোগ রাখা হয় নি। সর্বশেষ পাওয়া সংবাদে জানা যায় – শুধু মাত্র সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরাই অংশ নিচ্ছে।

অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী, দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর (যেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক একসঙ্গে) নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক।

কবে হতে পারে পরীক্ষা : প্রতিবছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা ও ছুটির তালিকাসহ বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০২৫ সালের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, প্রাথমিকে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১- ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০-১৫ দিন পর বৃত্তি পরীক্ষা নেয়া হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বৃত্তির পরীক্ষার সম্ভাব্য একটি তারিখও জানিয়েছে। সেটি হলো ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর। সেই হিসাবে ২১ ডিসেম্বর বাংলা, ২২ ডিসেম্বর ইংরেজি, ২৩ ডিসেম্বর গণিত এবং ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ তারিখে পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

কারা সুযোগ পাবে : অধিদপ্তর জানায়, তিন ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। তবে সেসব বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে আবার সুযোগ দেওয়া হবে না। শুধু ৪০ % শিক্ষার্থীকে মনোনীত করা হবে। অর্থাৎ কোনো বিদ্যালয়ে ১০০ জন শিক্ষার্থী থাকলে সর্বোচ্চ ৪০ জন এবং ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলে সর্বোচ্চ ২০ জন পরীক্ষা দিতে পারবে। অধিদপ্তরের নির্দেশনামতে, প্রথম সাময়িক পরীক্ষার (প্রথম প্রান্তিক) ফলাফলের ভিত্তিতে ৪০ % শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হবে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য।

প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ফলাফলে যারা প্রথম দিকে আছে-সেই মেধাক্রম অনুযায়ী ৪০% শিক্ষার্থী বাছাই করে তাদের রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে এ নিয়মে শিক্ষার্থী বাছাই করে সেই তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্ধারিত ছকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বৃত্তি শাখার এক কর্মকর্তা জানান, শিক্ষার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নীতিমালা না মানলে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পঞ্চম শ্রেণির শ্রেণিশিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কোন বিষয় ও কত নম্বরের পরীক্ষা : প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দীর্ঘদিন পর চালু হতে যাওয়া বৃত্তি পরীক্ষা হবে পাঁচ বিষয়ের ওপর। এর মধ্যে তিনটি বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বর করে এবং দুটি বিষয় একসঙ্গে করে ৫০ নম্বর করে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়া হবে। বিষয়গুলোর মধ্যে বাংলা,ইংরেজি, প্রাথমিক গণিত বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে। প্রতিদিন একটি করে বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে। পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা হবে এক দিনে। দুটি বিষয়কে একটি ধরে পরীক্ষা নেয়া হবে। বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অংশ থেকে ৫০ নম্বর এবং প্রাথমিক বিজ্ঞান থেকে ৫০ নম্বরের প্রশ্নপত্র থাকবে। এ পরীক্ষার জন্যও শিক্ষার্থীরা ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় পাবে।

এদিকে-চাঁদপরি সহ দেশের সব ইবতেদায়ি মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষাও আবার চালু হচ্ছে। ডিসেম্বরেই এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন মাদ্রাসাগুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পাঁচটি বিষয়ের ওপর পরীক্ষায় অংশ নেবে। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এতে বলা হয়েছে,২০২৫ সালের ইবতেদায়ি বৃত্তি পরীক্ষা ২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার বিষয় হিসেবে থাকবে কুরআন মাজিদ এবং আকাইদ ও ফিকহ (একত্রে),আরবি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র (একত্রে), বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত ও বিজ্ঞান (একত্রে)।

প্রতিটি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর করে বরাদ্দ থাকবে। মোট নম্বর হবে ৫০০। শুধু বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কোডভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ও সংযুক্ত ইবতেদায়ি শাখার শিক্ষার্থীরাই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। প্রতিটি মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০% পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত সিলেবাস ও মানবণ্টন বোর্ড থেকে শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে নির্দেশনায় জানানো হয়েছে। সর্ব শেষ–কিন্ডার গান্টেন শিক্ষার্থীগণ স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি পরীক্ষায় আদৌ অংশগ্রহণ করতে পারবে কী না এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা জানা যায় নি।

আবদুল গনি
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
এজি

Explore More Districts