এটা আল্লাহ তায়ালার বড় দয়া। আজ আমি সকল ভাইকে মোবারকবাদ দিচ্ছি। আপনাদের সকল ভাইকে আমি গোজারিশ করছি আজ (গতকাল) ১১ রবিউল আউয়াল, ১২ রবিউল আউয়াল– শ্রেষ্ঠ ঈদ। আজকে আপনারা তওবা করেছেন, ‘হে আল্লাহ আমি তওবা করছি, সকল গুনাহ থেকে।’ তওবা হচ্ছে আল্লাহর সামনে নিজের ভুলের জন্য লজ্জিত হয়ে, নতুন জীবন শুরু করা। আমাদের সবসময় ভুল হয়, শয়তান সবসময় গোমরা করার জন্য প্রচেষ্টায় আছে। আল্লাহর কাছে শয়তানের বয়ান ছিল, ‘আমি শয়তান তোমার খাস বান্দা ব্যতীত বাকিদেরকে গোমরাহীতে নিয়ে যাব।’ শয়তান গুনাহকে মজাদার বানিয়ে দেয়। আমাদের ছোট জীবনে নেকি কম। আমাদের জীবনের সকল গুনাহের কোনো হিসাব কি আছে? আমরা কম্পিউটার দিয়েও গুনাহ গুণতে পারবো না। এভাবে যদি গুনাহ করতে থাকি, আমরা কি আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে পারবো? এজন্য আল্লাহ আমাদেরকে একটি আজিম নেয়ামত দিয়েছেন, তা হলো– তওবা এর নেয়ামত। আল্লাহর সামনে এসে মাথা ঝুঁকিয়ে তওবা করে আমরা গুনাহ মাফ করাচ্ছি। এই এক মুহূর্ত কত মূল্যবান যে মুহূর্তে গোটা জীবনের গুনাহ মাফ হচ্ছে। একজন বান্দা আল্লাহর সামনে যাচ্ছে পাক–সাফ হয়ে আর একজন গুনাহ্র একটি বড় বোঝা নিয়ে যাচ্ছে তার কি অবস্থা হবে? যাকে আল্লাহ জওয়ানী দিয়েছে, সুস্থতা দিয়েছে, আওলাদ দিয়েছে, শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ সুস্থ, আল্লাহ চাইলে আমাকে মজুর বানাতে পারতেন। এজন্য আমাদের ওয়াফাদার (কৃতজ্ঞ) হওয়া উচিত। আমরা যদি গুনাহ করি তবে বেওয়াফাদারী করলাম। প্রত্যেকটা কাজে আমাদের সৎ হতে হবে। যিনি আমাদের সব দিয়েছেন, আমরা যখন দুনিয়া থেকে পর্দা করবো, আমরা যেন ওয়াফাদার হয়ে যেতে পারি। গুনাহের ওজনের পরিমাণ বুঝা অসম্ভব। আর আল্লাহ আমাদেরকে এই বেশুমার গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য তওবা দিয়েছেন, আওলাদে রাসূলের (দ.) দামান দিয়েছেন। আমাদের উপর একজনের বড় এহসান আছে, তিনি হলেন সৈয়দ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.), যিনি আমাদের জামেয়া দিলেন। আমি পৃথিবীর যেখানে গিয়েছি সেখানে দেখেছি জামেয়ার ফুল। আমাদের সকলকে সঠিক রাস্তা দেখানোর জন্য সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.)-কে পাঠালেন। এই সিলসিলা কিয়ামত পর্যন্ত চলবে। প্রায় ৭০ বছর হলো কমে নি, শুধু বেড়েছে। এটা খোস নসিব যে জামেয়া, আনজুমান, সিলসিলাহ, দাওয়াতুল খাইর সব পেয়েছি। অলিম্পিকে যেভাবে মশাল একজন থেকে আরেকজনের কাছে যায়, নবীজির (দ.) মশাল এভাবে যেতে থাকবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত। এই মশাল নবীজির (দ.) আমানত। এটা নবীজির (দ.) নূরানী হাতে আবার ফেরত যাবে। কাল কি হবে আমরা জানি না। কাল আমাদের হাতে নাই, আজ আমাদের হাতে আছে। আমরা আজকের দিন কাজে লাগাবো। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কোনো ছাড় নেই। এটা ফরজ। এরপর জামেয়া, আনজুমানের খেদমত।
গতকাল শুক্রবার জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার ময়দানে জুমা নামাজ শেষে উপস্থিত লাখো মুসল্লির উদ্দেশ্যে আওলাদে রাসূল, পীরে বাঙাল হুজুর কেবলা, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ) সিলসিলাহ্র কার্যক্রম পরিচালনার পর তাঁর বয়ানে এসব কথাগুলো বলেন। তাঁর ইমামতিতে আরও দুইজন আওলাদে রাসূল জুমার নামাজে শরীক হন, সাহেবজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ) ও সাহেবজাদা সৈয়্যদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মা.জি.আ)।
দায়েম নাজির জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবাইর রজভীর সঞ্চালনায় জুমা পূর্ববর্তী সময়ে বক্তব্য দেন, আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন আযহারী, জামেয়া মসজিদের পেশ ইমাম ক্বারী মাওলানা মুহাম্মদ ইব্রাহীম, জামেয়া মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক মাওলানা মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, খতিবের হাট জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মনজুর আলম (মনজু), ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আমির হোসেন সোহেল, এডিশনাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সামশুদ্দীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এস এম গিয়াস উদ্দীন (সাকের), ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ কমর উদ্দীন (সবুর), প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দীন, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়্যদ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান, বর্তমান অধ্যক্ষ হাফেজ কাজী আবদুল আলীম রেজভী, উপাধ্যক্ষ এটিএম লিয়াকত আলী, আনজুমান সদস্য পেয়ার মোহাম্মদ, আনোয়ারুল হক, তৈয়বুর রহমান, নুরুল আমিন, আবদুল হামিদ, আবদুল হাই মাসুম, মোহাম্মদ আলী, প্রফেসর জসিম উদ্দীন, মাহবুবুল আলম, সাদেক হোসেন পাপ্পু, মাহবুব ছাফা, মোহাম্মদ হোসেন খোকন, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সদস্য মাহমুদ নেওয়াজ, মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রমুখ।
আনজুমানের শতবর্ষ, মাসিক তরজুমানের সুবর্ণজয়ন্তী এবং পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে তরজুমানের বিশেষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন হুজুর কেবলা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ), সাহেবজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ), সাহেবজাদা সৈয়্যদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মা.জি.আ) এবং ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দ। শেষে হুজুর কেবলা (মা.জি.আ) সকলের মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।