“বিল দিচ্ছি নিয়মিত, তবুও বিদ্যুৎ পেতে ঘুষ দিতে হয়”—এমন ক্ষোভ আর অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন নড়াইলের সাধারণ গ্রাহকরা। যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–০২ এর তালতলা জোনাল অফিসের ডিজিএম হাওলাদার রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নড়াইল-ঢাকা মহাসড়কের নাকশী মাদরাসা বাজার এলাকায় এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা জানান—
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ট্রান্সফরমার নষ্ট হলে কিংবা লাইনের কোনো সমস্যা দেখা দিলে, সমাধানের জন্য প্রথমেই চাওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। টাকা না দিলে দিনের পর দিন বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়। শুধু তাই নয়, নারী গ্রাহকদের সঙ্গেও নাকি চরম অশোভন আচরণ করে থাকেন তিনি।
ভুক্তভোগী মশিয়ার সিকদার বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, বিদ্যুতের বিলই দিতে হিমশিম খাই। তারপরও যখন মেরামতের নামে ঘুষ দিতে হয়, তখন আমাদের আর কোথায় যাওয়ার থাকে?”
হাদিউজ্জামান হাদি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, “বিদ্যুতের অফিসে গেলেই অপমান শুনতে হয়। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা যদি আমাদের সঙ্গে এমন করেন, তাহলে সাধারণ মানুষের অধিকার কোথায়?”
আরেক গ্রাহক ডাবলু ফকির বলেন, “আমাদের টাকা আত্মসাৎ করে তিনি নিজের সম্পদ বাড়াচ্ছেন, আর আমরা অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছি।”
শাহরিয়ার পারভেজ ইমন সহ অন্যান্য বক্তারা জানান, দিনের পর দিন ভোগান্তি সইতে সইতে আজ তারা পথে নেমেছেন। তাদের দাবি, এই অন্যায় আর চলতে দেওয়া যায় না। ডিজিএম রুহুল আমিনকে দ্রুত অপসারণ ও কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
বক্তাদের আবেগঘন কণ্ঠে একটাই আকুতি—
“আমরা ভিক্ষা চাই না, আমরা আমাদের প্রাপ্য সেবা চাই। বিদ্যুতের নামে চাঁদাবাজি আর হয়রানি আর সহ্য করবো না।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিজিএম হাওলাদার রুহুল আমিন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন। আমি গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।”
অভিযোগকারীদের মুখে ক্ষোভের সঙ্গে মিশে ছিল কষ্ট আর বঞ্চনার দীর্ঘশ্বাস। তারা জানালেন—তাদের প্রতিবাদ কোনো রাজনৈতিক নয়; এটা একান্তই জীবনের আলো ফিরিয়ে আনার লড়াই।