ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর চীনের বাঁধ হবে ভারতের জন্য বোমার মতোই ভয়ঙ্কর – DesheBideshe

ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর চীনের বাঁধ হবে ভারতের জন্য বোমার মতোই ভয়ঙ্কর – DesheBideshe



ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর চীনের বাঁধ হবে ভারতের জন্য বোমার মতোই ভয়ঙ্কর – DesheBideshe

নয়াদিল্লি, ১১ জুলাই – তিব্বত, ভারত ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প শুরু করেছে চীন। তবে প্রকল্প শেষ হলে এই বাঁধ ভারতের অরুণাচল রাজ্যের জন্য বোমার মতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু।

বুধবার ভারতীয় বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট ইন্ডিয়া (পিটিআিই)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সতর্কবার্তা দিয়ে অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ওই বাঁধ ভারতের জন্য বোমার মতোই ভয়ঙ্কর এবং ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের চেয়েও বেশি কিছু। চীনের এই প্রকল্প শেষ হলে তা আমাদের জীবন-জীবিকার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।”

হিমালয়ের কৈলাস পর্বতের মানস সরোবর থেকে উৎপত্তি ব্রহ্মপুত্র নদের। এই কৈলাস পর্বতের অবস্থান বর্তমান চীনের স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ তিব্বতে। মানস সরোবার থেকে উদ্ভূত হওয়ার পর তিব্বতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভারতের অরুণাচল রাজ্য, আসাম এবং তারও পরে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় প্রবেশ করে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র। তিব্বতে এবং চীনে এই নদের নাম ইয়ারলুঙ্ক সাংপো, অরুণাচলে নাম সিয়াং, আসামে প্রবেশের পর নদের নাম হয়েছে ব্রহ্মপুত্র।

২০২১ সালে তিব্বত সফরে গিয়েছিলেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। সে সময় এই বাঁধ প্রকল্পের ঘোষণা দেন তিনি। সরকারিভাবে এই প্রকল্পের নাম ‘ইয়ারলুংক সাংপো বাঁধ’। লি কেকিয়াং সে সময় বলেছিলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই বাঁধটি হবে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ।

এই বাঁধ নির্মাণের ওপর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে চায় চীন। চীনা প্রকৌশলীদের তথ্য অনুসারে, ইয়ারলুঙ্ক সাংপো নদের বাঁধের ওপর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা গেলে তা থেকে প্রতিদিন ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এই বাঁধ ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ২০২৪ সালে ১৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে বেইজিং। এর আগে বিশ্বের আর কোনও প্রকল্পে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়নি। নদের নিম্ন উপত্যকায় ভারত সীমান্তের অনতিদূরে বাঁধটি তৈরি করা হচ্ছে।

চীন আন্তর্জাতিক পানি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। পেমা খাণ্ডুর আশঙ্কা, বাঁধ নির্মাণ হয়ে গেলে ভরা বর্ষা মৌসুমে পরিকল্পিতভাবে বাঁধের ‘লক গেইট’ খুলে দিতে পারে চীন। যদি সত্যিই এমন হয়, সেক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ পানির ঢলে ভেসে যাবে অরুণাচলের টুটিং, ইঙকিয়াং, পাসিঘাটসহ এরও বেশ কিছু শহর। এমনকি অরুণাচলের অনেক এলাকার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে উঠবে।

গত কয়েক বছরে অরুণাচলে ‘সিয়াং’ বা ব্রহ্মপুত্রের পানির স্তর বেশ কয়েক বার ওঠানামা করেছে এবং এ জন্য চীনের বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পকে দায়ী করেছে নয়াদিল্লি। বেইজিং অবশ্য এ অভিযোগকে বরাবরই অস্বীকার করেছে।

তাছাড়া তিব্বতের অবস্থান উজানে হওয়ার কারণে এই বাঁধ নির্মাণ হলে ভারত ও বাংলাদেশে নদীর প্রবাহ শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

“সমস্যা হলো, চীন আন্তর্জাতিক পানিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। এ কারণেই চীনকে বিশ্বাস করা যায় না। কেউই জানে না যে তারা কী করতে পারে,” বলেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ১১ জুলাই ২০২৫



Explore More Districts