নয়াদিল্লি, ১০ জুলাই – ইয়েমেনে এক স্থানীয় নাগরিককে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার প্রাণ বাঁচাতে ১০ লাখ ডলার ‘দিয়াহ’ (রক্তমূল্য) দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তারিখ ১৬ জুলাই নির্ধারিত হলেও প্রিয়াকে বাঁচানোর জন্য এখনো চলছে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মাহদি হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর মাহদির পরিবারের ক্ষমা ছাড়া প্রিয়ার বাঁচার আর কোনো পথ নেই। ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিল’-এর পক্ষ থেকে মাহদির পরিবারকে ইতোমধ্যে ১০ লাখ ডলার রক্তমূল্য দেয়ার প্রস্তাব জানানো হয়েছে।
কাউন্সিলের সদস্য বাবু জন জানান, “আমরা এখনো মাহদির পরিবারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। সবকিছু এখন তাদের হাতে।”
২০১৭ সালে মাহদির মৃতদেহ উদ্ধারের পর ৩৪ বছর বয়সী নিমিশা প্রিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি সানার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ দিয়ে হত্যার পাশাপাশি মৃতদেহ খণ্ড খণ্ড করার অভিযোগ আনা হয়, যা প্রিয়া অস্বীকার করেছেন।
আদালতে তার আইনজীবী যুক্তি দেন, মাহদি তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন, সম্পত্তি ও পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিলেন এবং বন্দুক দেখিয়ে ভয় দেখান। আত্মরক্ষার্থে পাসপোর্ট ফেরত পেতে মাহদিকে অজ্ঞান করতে গিয়ে ‘ভুলবশত অতিরিক্ত ডোজ’ হয়ে যায় বলে দাবি করা হয়।
২০২০ সালে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় স্থানীয় আদালত, যা ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টেও বহাল থাকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে হুতি বিদ্রোহীদের সুপ্রিম পলিটিক্যাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাহদি আল-মাশাত এই রায় অনুমোদন করেন।
তবে ইয়েমেনের ইসলামী আইনে ‘দিয়াহ’র বিনিময়ে ক্ষমার সুযোগ রয়েছে। সেই আশায় নিমিশার মা, একজন দরিদ্র গৃহকর্মী, ২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে অবস্থান করছেন এবং মাহদির পরিবারের সঙ্গে আলোচনার জন্য সমাজকর্মী স্যামুয়েল জেরোমকে মনোনীত করেছেন।
‘সেভ নিমিশা প্রিয়া’ গ্রুপ ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে মাহদির পরিবারকে প্রস্তাব দিয়েছে। এখন বাঁচার শেষ আশাটা মাহদির পরিবারের ক্ষমার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এনএন/ ১০ জুলাই ২০২৫