ইন্দুরকানীতে ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ফেলে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা

ইন্দুরকানীতে ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ফেলে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা

২৪ June ২০২৫ Tuesday ১০:৪২:২৭ PM

Print this E-mail this


ইন্দুরকানী ((পিরোজপুর) প্রতিনিধি:

ইন্দুরকানীতে ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ফেলে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রায় ৩০ কোটি টাকার ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ফেলে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছেন অধিকাংশ ঠিকাদার। ফলে এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে এবং চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে রাস্তা নির্মাণ, গার্ডার ব্রিজ, সাইক্লোন শেল্টার ও ড্রেন নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ। প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগ কাজের মেয়াদ ৪ থেকে ৫ বছর আগে শেষ হলেও কাজগুলো সম্পূর্ণ না করেই অধিকাংশ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসব প্রকল্পের অধিকাংশ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা রয়েছে পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন মহারাজ, তার ভাই ভাণ্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিরাজ হোসেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নামে। সরকার পরিবর্তনের পর, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে এদের কেউ আর এলাকায় দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার (২৩ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, ইন্দুরকানী উপজেলা সদর থেকে সাঈদখালী, মধ্য কালাইয়া রোড থেকে সরদারবাড়ী, পত্তাশী ইউনিয়ন থেকে খেজুরতলা হাট, চালনা ব্রিজ থেকে বৌডুবি, বালিপাড়া জোমাদ্দার হাট থেকে কাপালিবাড়ী, চন্ডিপুর স্টিল ব্রিজ থেকে খোলপটুয়া, বালিপাড়া হাইস্কুল থেকে সোবাহান চেয়ারম্যানের বাড়ি, পাড়েরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে হোগলাবুনিয়া এবং চাড়াখালী কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটারের বেশি সড়কের নির্মাণকাজ ফেলে রাখা হয়েছে।

বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, সড়কের পাশের ব্রিজ ও কালভার্টের কাজও অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এসব সড়কে পানি জমে চলাচলে মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এসব প্রকল্পের অধিকাংশ টেন্ডার পেয়েছে ইএফটি-ইটিসিএল, সরদার এন্টারপ্রাইজ এবং ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স নামক প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালে যেসব কার্পেটিং রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, তা এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

এ বিষয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা প্রকৌশলী লায়লা মিথুন বলেন, “ইএফটি-ইটিসিএলসহ একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। কিছু প্রকল্পের অর্থ ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থগিত কাজগুলো পুনরায় শুরু হবে।”

এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। নাহলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও দীর্ঘায়িত হবে। মোঃ শাহিদুল ইসলাম।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts