সিলেটে যুগোপযোগী আধুনিক শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন 

সিলেটে যুগোপযোগী আধুনিক শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন 

সিলেটে যুগোপযোগী আধুনিক শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন সিলেটের মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন পরিচালিত সিলেট কমার্স কলেজ, সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ, মুহিবুর রহমান একাডেমি, ইডেন গার্ডেন মহিলা কলেজ ও মুহিবুর রহমান একাডেমি ফেঞ্চুগঞ্জ শাখার ঈদ পুনর্মিলনী ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) নগরীর দরগাহ মহল্লায় অবস্থিত মুহিবুর রহমান একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত গুণীজন বিশিষ্ট শিল্পপতি, শিক্ষাবিদ, লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজসহ অগণিত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনের প্রবাদপুরুষ, জনকল্যাণ ও মানবসেবায় অসামান্য অবদান রাখা অনুপম ব্যক্তিত্ব, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন, বৃহত্তর সিলেটের গর্ব দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের অনবদ্য আয়োজনে সংবর্ধিত হয়ে প্রবীণ এই ‘লিভিং লিজেন্ড’ বলেন, ‘আমি মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আগ থেকেই জানি। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান একজন স্বপ্নবান মানুষ। তিনি অত্যন্ত সজ্জন। শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদান মানুষ মনে রাখবে। আমাকে অল্প সময়ের মধ্যে এরকম একটি সংবর্ধনা প্রদানের জন্য তাঁকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এই সম্মান আমি ভুলব না। মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন এগিয়ে যাক।’ ফাউন্ডেশনের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভালো আছেন। নিরাপদ আছেন। আনন্দচিত্তে কাজ করছেন। আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যান। অধ্যাপক মুহিবুর রহমান একজন সাদা মনের মানুষ। আমি আশা করি আগামী দিনগুলোতেও আপনরা তাঁর সাথে আনন্দচিত্তে কাজ করে যাবে। তাঁর স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’

ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মুহিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার অত্যন্ত খ্যাতিমান পুরুষ দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী আমাদের গর্ব। তাঁর মতো দানশীল মানব দরদী ব্যক্তিত্ব আমরা বংলাদেশে দ্বিতীয় কাউকে দেখিনি। তিনি আমাদের জীবন্ত কিংবদন্তি। সর্বক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদান চিরকাল আমরা মনে রাখবো।’

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। আমরা এমন একজন মানুষকে আজ আমাদের মাঝে পেয়েছি, যিনি নিজ কর্মগুণে বহুকাল ধরে বাংলাদেশে শ্রদ্ধেয় এবং সম্মানিত। শুধু বাংলাদেশে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তাঁর সুনাম ও সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর মতো মানবহিতৈষী মহাজন আমাদের সময়ে বিরল। শিক্ষা, শিল্প, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিং, ব্যবসায়, ক্রীড়া ও গণমাধ্যম, শিল্প-উদ্যোগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জনকল্যাণ ও মানবসেবা এবং দানশীলতায় তিনি প্রবাদপুরুষ। তাঁর নামের সাথে আজ অবধারিতভাবে উচ্চারিত হয় ‘দানবীর’ শব্দটি। তিনি দীর্ঘ জীবন জুড়ে এদেশের মানুষের জন্য যে কল্যাণমূলক কাজ করেছেন তা এককথায় অসামান্য, অসাধারণ। এদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের আশ্রয় তিনি। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা।’

মুহিবুর রহমান একাডেমির উপাধ্যক্ষ মো. ইমদাদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় পুনর্মিলনী ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুহিবুর রহমান একাডেমির রেক্টর জনাবা সালমা খানম চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের এমডি অধ্যাপক মো. ফরিদ আহেমদ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী এমন একজন মানুষ যার তুলনা তিনি নিজেই। সিলেট থেকে এমন কোনো সড়ক-মহাসড়ক বের হয়ে যায়নি যার পাশে রাগীব আলী বা তাঁর স্ত্রী মহীয়সী রাবেয়া খাতুনের নামে কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। তিনি দেশের প্রত্যন্ত দুর্গম পাবত্য জেলায়ও বহুকাল আগে নির্মাণ করে দিয়েছিলেন স্কুল। তাঁর মতো উদার, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব আমাদের কালে আমরা দ্বিতীয়জন দেখিনি।

তিনিই সিলেটে প্রথম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান অম্লন থাকবে চিরদিন।

এশিয়ান আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মো. নেসার আলী তাঁর বক্তব্যে দানবীর ড. রাগীব আলীর জীবন ও কর্মের উপর আলোকপাত করেন। তিনি আশা করেন, তাঁর সঙ্গে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের যে সেতুবন্ধন তৈরি হলো তা অক্ষত থাকবে।

মুহিবুর রহমান একাডেমির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামছ উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘ড. রাগীব আলী আমাদের সময়ের হাজী মহসিন। তাঁর স্ত্রী আমাদের কালের বেগম রোকেয়া। ড. রাগীব আলী মানবকল্যাণে যে অপরিসীম অবদান রেখেছেন তাঁর দীর্ঘ জীবনে তা সত্যিকার অর্থেই বিপুল। তাঁরই কাজের ধারাবাহিকতা যেন বহন করে চলেছেন অধ্যাপক মুহিবুর রহমান। তিনি বলেন অসাধারণ দুইজন মানুষের সাক্ষৎ হলো আজ। একজন বয়সে শতাব্দী ছুঁয়েছেন প্রায়। অন্যজন অর্ধ-শতাব্দী স্পর্শ করছেন। কিন্তু দুজনের কাজের কী অসাধারণ মিল। এইভাবে যুগে যুগে মহাজনরা আসেন আর একজন এগিয়ে নিয়ে যান অন্য জনের মহৎ কাজটি।

অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে পবিত্র কোরআন থেকে তেলায়াত করেন একাডেমি শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিলেট কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ মো হারুন মিয়া, ইডেন গার্ডেন মহিলা কলেজের রেক্টর আ.ন.ম ইয়াহইয়া, মুহিবুর রহমান একাডেমি ফেঞ্চুগঞ্জ শাখার অধ্যক্ষ রেহান কবীর এবং পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

উল্লেখ্য, দানবীর ড. সৈয়দ রাগীব আলী মহোদয়কে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফুলেল লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। বাজানো হয় তাঁকে নিয়ে রচিত সংগীত। তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে মানপত্র পাঠ করেন একাডেমির শিক্ষিকা মারুফা আক্তার। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান পরে সংবর্ধিত অতিথির হাতে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মানপত্র এবং ক্রেস্ট তুলে দেন।

ডিএস/আরএ

Explore More Districts