মুসলিমদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সিলেটসহ সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে এই উৎসব। ত্যাগ ও কোরবানির শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখ এই উৎসব উদযাপন করা হয়।
সিলেটে উৎসবমুখর পরিবেশে শনিবার (৭ জুন) ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এ জামাতে ছিল মুসল্লিদের ঢল। নামাজের সময়ের অনেক আগে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পুরো ঈদগাহ ময়দান।
ঈদের জামাতে ইমামতি করেন বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি জুনায়েদ আহমদ। খুতবা প্রদান করেন মাওলানা মুশতাক আহমদ খান।
কোরবানির মহৎ আদর্শ তুলে ধরে তাঁরা মুসলিম উম্মাহর সংহতি, ভ্রাতৃত্ব এবং বিশ্ব শান্তি কামনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন।
এছাড়া সিলেট নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মসজিদেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে ধর্মপ্রাণ মানুষের অংশগ্রহণে। জেলা ও মহানগর পুলিশের তথ্যমতে, নগরীর ৩৯০টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে ১৪২টি হয়েছে খোলা মাঠে এবং ২৪৮টি মসজিদে। পুরো সিলেট জেলাজুড়ে মোট ২ হাজার ৫৫১টি জামাতের আয়োজন করা হয়েছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ সতর্কতা। শাহী ঈদগাহ এলাকা ছিল চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে ঘেরা। মোতায়েন ছিল সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, মোবাইল টিম, ট্রাফিক পুলিশ, ড্রোন নজরদারি ও রুফটপ ইউনিট।
এদিকে, ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গেছেন অনেকে। ফলে শহরের রাস্তাঘাট প্রায়ই ফাঁকা। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে বলেছেন, মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও চরম ত্যাগের নিদর্শন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল (আঃ)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হন। এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সারা বিশ্বের মুসলমানগণ ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ ও আত্মদানের এই মহান দৃষ্টান্ত কেয়ামত পর্যন্ত বিশ্ববাসীর কাছে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।