আজাদীতে নিউজ প্রকাশের পর রক্ষা হলো শহীদের কবরের সম্মান – দৈনিক আজাদী

আজাদীতে নিউজ প্রকাশের পর রক্ষা হলো শহীদের কবরের সম্মান – দৈনিক আজাদী

হাটহাজারীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবরের সাইনবোর্ড উধাও শিরোনামে দৈনিক আজাদী পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে নিউজ প্রকাশের পর বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের নির্দেশে সেই শহীদের কবরের সম্মান রক্ষা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

কবরস্থানটির পবিত্রতা রক্ষায় পুনরায় লাগিয়ে দেয়া হয়েছে সাইনবোর্ড। বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) দুপুরের দিকে উল্লেখিত স্থানে মীর হেলালের নির্দেশে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুনরায় সাইনবোর্ডটি লাগিয়ে দেন।

হাটহাজারীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবরের সাইনবোর্ড উধাও’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে দৈনিক আজাদী পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।প্রতিবেদনে উঠে আসে, পৌরসভার মীরের হাট বাজারের পশ্চিমে রেললাইনের পাশে একাত্তরে শহিদ হওয়া অজ্ঞাতনামা এক ইপিআর সদস্যের কবরের স্থানটি অরক্ষিত এবং সেখানে কোরবানির হাটের গরু বেঁধে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি নজরে আসার পর বর্তমানে হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে অবস্থানরত বিএনপি নেতা মীর হেলাল স্থানীয় নেতাকর্মীদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে তিনি মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে বলেন, “বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। কবরের সম্মান রক্ষা করা প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব।” তিনি পবিত্র কোরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে কবরের সম্মান রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

এর আগে সরেজমিনে দেখা যায়, মীরেরহাটের সামাজিক সংগঠন ‘ঝিনুক ক্লাব’-এর পক্ষ থেকে “বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর, পবিত্রতা রক্ষা করুন” লেখা যে সাইনবোর্ডটি টাঙানো ছিল, তার কোনো অস্তিত্ব নেই। স্থানীয়রা জানান, গত বছরের আগস্ট মাসের পর থেকে সাইনবোর্ডটি উধাও হয়ে যায় এবং এরপর কবরের আশেপাশে বেশ কয়েকটি দোকানও নির্মাণ করা হয়। নামফলক না থাকায় স্থানটি অচিহ্নিত হয়ে পড়ে এবং কোরবানির হাটের বিক্রেতারা সেখানে গরু বাঁধতে শুরু করেন, যা শহীদের প্রতি চরম অবমাননার সামিল।

স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এক ইপিআর সদস্য পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে হাটহাজারীর মুন্সী মসজিদে আশ্রয় নেন। কিন্তু পাকিস্তানি সেনারা তাকে ধরে নিয়ে মীরের হাটের পশ্চিমে রেললাইনের পাশে গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তার গায়ে ‘ইপিআর’ লেখা গেঞ্জি দেখে সেখানেই তাকে দাফন করেন।

‘ঝিনুক ক্লাব’ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে এই কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছিল। ক্লাবের সদস্যরা জানান, এই কবরসহ অপর একজন শহিদের কবর পাকা করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও তারা কোনো সাড়া পাননি।

শহিদের কবরের পবিত্রতা রক্ষায় দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ায় বিএনপি নেতা মীর হেলালসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা পাক্ষিক ‘উত্তর চট্টলার’ সম্পাদক হাটহাজারী প্রেস ক্লাব সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম দিদারুল আলম দুলাল। তিনি বলেন, “স্বাধীনতা লাভের ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এই অজ্ঞাত শহিদের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় মেলেনি। সম্মিলিত সামরিক বাহিনী বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিলে এই শহীদের স্মৃতি রক্ষা এবং তার প্রতি যথাযথ সম্মান জানানো সম্ভব হবে।”

Explore More Districts