গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল – DesheBideshe

গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল – DesheBideshe



গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল – DesheBideshe

তেল আবিব, ০৩ মে – ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাস উৎখাত আর তাদের কবল থেকে জিম্মি উদ্ধারের নামে ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যা চলছেই। প্রতিদিনই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা; দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল। নিরাপদ বলে কোনো স্থান বাকি নেই গাজাবাসীর জন্য। একদিকে আকাশ ও স্থল অভিযান, অন্যদিকে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ; গাজা যেন সাক্ষাৎ নরক হয়ে উঠেছে তার বাসিন্দাদের জন্য।

এ অবস্থায় গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা অনুমোদন পেয়ে গেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ক্যাবিনেটে। পরিকল্পনাটি এখন ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ ক্যাবিনেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, যা কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।

শনিবার (৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে রয়টার্স।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি এক কর্মকর্তার বরাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইনেত জানিয়েছে, হামাস যতদিন জিম্মিদের ছেড়ে না দিচ্ছে, ইসরায়েল ততদিন গাজায় সামরিক অভিযানের তীব্রতা বৃদ্ধি করতে থাকবে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১ মে) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, আমরা জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তবে গাজায় আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো হামাসকে পরাজিত করা।

ইসরায়েলি সংবাদমধ্যমটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রোববার (৩ মে) পূর্ণাঙ্গ ক্যাবিনেটে পরিকল্পনাটি অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে।

প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাইয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয়ে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে কার্যালয়ের মুখপাত্র কোনোরকম মন্তব্য করতে রাজি হননি এ ব্যাপারে।

এদিকে গত ১৮ মার্চ থেকে ভেস্তে যাওয়া যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর করার চেষ্টা করে যাচ্ছে মিশর এবং কাতার। তবে, ইসরায়েল ও হামাস কেউই নিজেদের মূল দাবি থেকে সরে আসেনি। কার্যকর চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থতার জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে আসছে।

ইসরায়েল বলছে, গাজায় এখনও ৫৯ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে এবং হামাসকে নিরস্ত্র করে ভবিষ্যতে গাজার শাসন থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া না হলে কোনও চুক্তি সম্ভব নয়। অন্যদিকে, হামাসের দাবি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার না হলে আর কোনও বন্দি বিনিময় চুক্তি হবে না।

চুক্তির বিষয়ে হামাসকে দোষারোপ করে নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মিশরের প্রস্তাবিত চুক্তি তারা প্রত্যাখ্যান করেনি। হামাসই বরং চুক্তি সম্পাদনের পথে বাধা তৈরি করছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গাজায় ভয়াবহ এক অভিযানে নামে ইসরায়েলি বাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক আগ্রাসন জারি রাখার পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি টানতে সম্মত হয় নেতানিয়াহু প্রশাসন। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে গাজায় ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৪৬১ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এর মধ্যে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৫ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

সূত্র: আরটিভি নিউজ
এনএন/ ০৩ মে ২০২৫

 



Explore More Districts