ঢাকা, ২২ এপ্রিল – এক বছরের মেয়ে সন্তানকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে বাসার গৃহকর্মীকে মারধর করেছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। এমন অভিযোগে নায়িকার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই গৃহকর্মী পিংকি আক্তার। তিনি আজ ২২ এপ্রিল পরীমনিকে ১ নম্বর আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন।
গত ৩ এপ্রিল পরীমনির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে ঢাকার ভাটারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন পিংকি আক্তার। এবার করলেন মামলা। সেই মামলায় পরীর সঙ্গে আরও আসামি করা হয়েছে একই ফ্ল্যাটে বসবাস করা সৌরভ (২৮) নামে এক ব্যক্তিকে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালতে বাদী হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী গৃহকর্মী পিংকি আক্তার। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আগামী ৮ মে’র মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসিদুস জামান নিশান।
জানা গেছে, মামলার বাদী ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার (২৪) নেত্রকোনা জেলা সদরের মৌগাতী ইউনিয়নের ফাদুলিয়া গ্রামের মো. মোজাম্মেলের মেয়ে। মামলার এজাহারে অভিযোগ বাদী অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের মার্চে মামলার বাদী পিংকি আসামিদ্বয়ের বাসায় কাদের এজেন্সি নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহপরিচারিকার কাজের জন্য চাকরি নেন। একটি বাচ্চাকে দেখাশোনার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলে এজেন্সি হতে বাদীকে আসামিদের বাসায় নিয়োগ দেওয়া হলেও তাকে দুটি বাচ্চার দায়িত্ব পালন করতে হতো।
এছাড়া বাদীকে দিনে ও রাতে উভয় সময় বাসার রান্নার কাজ করতে হতো। তবুও বাদীর চাকরি একান্ত আবশ্যক হওয়ায় তিনি মুখ বুঝে সহ্য করে আন্তরিকতার সাথে তার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তবে চলতি বছরের ২ এপ্রিল দুপুর ১টায় আসামি পরীমনি তার মেকআপ রুম থেকে মাদক গ্রহণ করে বাচ্চার রুমে এসে বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। বাদী গালিগালাজ কেন করছেন জানতে চাইলে পরীমনি বলেন, ‘তুই আমার বাচ্চার জন্য দুধ কেন তৈরি করছিস, এখন ওকে সলিড খাবার দিবি।’ বাদী বলে, ‘বাচ্চার খাওয়ার রুটিন অনুসারে এখন দুধ খাওয়ানোর কথা, তাই আমি দুধ তৈরি করেছি।’
এসময় পরীমনি ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীর মাথায়, মুখে ও চোখে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পড় মেরে আহত করে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী বাদী পিংকি পরীমনির মারধরে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর বাদী ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য ভুক্তভোগী পিংকি তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য পরীমনিকে অনুরোধ করতে থাকেন। ঘটনার সময় ২নং আসামি সৌরভ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু আসামিরা বাদীর কোনো কথা শোনেননি। উপরন্তু আসামি সৌরভ পিংকিকে নির্যাতন করার জন্য পরীমনিকে উৎসাহিত করতে থাকেন এবং বাদীকে বাসার বাইরে যাওয়া থেকে বিরত করেন।
পরে ভুক্তভোগী পিংকি ৯৯৯ এ কল করে পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে যান। পরে ভুক্তভোগী পিংকি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার গত ৪ এপ্রিল ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেটির কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য না করে তিনি আদালতে মামলা করেন।
এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৩/৩২৪/৩০৭/৫০৬/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আইএ/ ২২ এপ্রিল ২০২৫