চিকিৎসার জন্য ঘর থেকে বের হয়েছিলেন মৃত নুরুল আলমের সত্তর বছর বয়সী স্ত্রী শাহনাজ বেগম। বাড়িতে আসার পর দেখের ঘরে তালা ঝুলছে। অসুস্থ শাহনাজ মেয়েদের সহযোগিতায় হুইল চেয়ারে ভর করে চলেন। কাতর শরীর নিয়ে প্রতিবেশের জিজ্ঞেস করলে বলেন তার স্বামীর বড় ভাই মোঃ শামসুল আলম ও তার দুই ছেলে আবু তৈয়ব ও আবু বক্কর সিদ্দীক এসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর সকাল ১০ টায় সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামে এ অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে।
এতে বৃদ্ধা অসহায় মহিলা বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। দায়েরকৃত অভিযোগসুত্রে জানা যায়, বৃদ্ধা শাহনাজ বেগমের স্বামী বেঁচে নেই। তার ছয় কন্যা সন্তান রয়েছে। কোন পুত্র সন্তান না থাকায় আমার স্বামীর রেখে যাওয়া বসতঘরটি জবরদখল করার পায়তারা করে আসছিলো স্বামীর বড় ভাই শামসুল আলম। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সমঝোতার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্বামীর ভাই শামসুল আলম স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় কারো বিচার মানে না। আমাকে সে ও তার ছেলেদের দিয়ে প্রতিনিয়ত হুমকী দিতো। ঘর থেকে বের হলেই তালা লাগিয়ে দিবে। আমি হঠাৎ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে মেয়েদের কাছে যাই ডাক্তার দেখানোর জন্য। ডাক্তার দেখিয়ে ঘরে ফিরে আসলে দেখি ঘরে তালা মারা। এ সময় আমার মেয়েরা তাদের কাছে তালা খুলে দিতে বললে খারাপ আচরণ করতে থাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকী দেয়।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ঘরে ঢুকতে চাইলে তাদের বাহিরে রেখে গেট আটকে রাখা হয়।
ভাটিয়ারী সাবেক ইউপি মেম্বার খাইরুল ইসলাম বলেন, এটা ওনাদের বাবা-মায়ের ঘর। এখানে তার চাচারা ঢুকতে দিচ্ছে না। তার মা একজন প্যারালাইস রোগী। হুইল চেয়ারে বসে তার ৬ কন্যাকে নিয়ে সকাল থেকে গেটের সামনে বসে আসে। একপ্রকার অনসন করছে তারা। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমঝোতা করার জন্য কিন্তু তার চাচারা মানছে না।
ভাটিয়ারী সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ নুরুল আনোয়ার বলেন, সকাল থেকে আমরা বৈঠকে বসি। কোনভাবেই ভুক্তভোগী বৃদ্ধা নারী শাহনাজ বেগমকে তারা বাড়িতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। মহিলাটি একদিকে প্যারালাইস রোগী। তার ঘরে থাকা খুবই দরকার। সে সারাদিন কোন খাাবার ঔষধ কিছুই খায়নি। বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক বটে।
এসসি/সিটিজিনিউজ