১৯ জুলাই বিকেলে আমাকে ফোন করলেন আন্দোলনের সহযাত্রী ভূঁইয়া মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। বললেন, ‘তুমি একটা বিবৃতি লেখো।’ এটিই ছিল ‘আন্দোলন চলবে’ শিরোনামে ৬২ জন সমন্বয়কের বিবৃতি, যা ২১ জুলাই পত্রিকায় ছাপা হয়। বিবৃতিটির উদ্দেশ্য ছিল টিভিতে দেখানো ৮ দফাকে খণ্ডন করা। আবদুল কাদের যে ৯ দফা দেবে, তখনো আমি তা জানতাম না।
ইন্টারনেট বন্ধের সময় পত্রিকায় দুটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়—৬২ জন সমন্বয়কের বিবৃতি আর আবদুল কাদেরের ৯ দফা। প্রথম বিবৃতিটি যৌথ নামে ছাপা হলেও এটি লিখেছিলাম আমি আর আমার ভাই। আসাদ ভাই বিবৃতিতে কী লেখা যেতে পারে, তা আমাকে বললেন। সে অনুযায়ী ভাইয়ের মুঠোফোনের খুদে বার্তায় ধাপে ধাপে লিখে আসাদ ভাইকে পাঠাচ্ছিলাম আমি এবং তিনি ভাষা ঠিক করে দিচ্ছিলেন। এ সময় ফোন করে সাহস দিয়েছিলেন নাহিদা সরওয়ার নিভা আপু। আর ৬২ জন সমন্বয়কের তালিকা পাঠিয়েছিলেন আবদুল্লাহ সালেহীন অয়ন।
বিবৃতিটি নিয়ে আসাদ ভাই, নিভা আপু, আমি ও আমার ভাই সেদিন যুদ্ধই করেছিলাম। মনে হচ্ছিল, কোথাও এটি ছাপা হবে না, কেউ জানতেও পারবে না, কী আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম আমরা। অসহায়ের মতো ডাইনিং টেবিলে বসে বিভিন্নজনের কাছে খুদে বার্তা মারফত পাঠাচ্ছিলাম বিবৃতি। উদ্দেশ্য একটাই, মানুষের কাছে যেন আমাদের বার্তা পৌঁছায়।
এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কত বুক খালি হলো, আপন হলো কতজন। সবার কত সাহস দেখলাম। সম্মিলিত সাহসের ফল আমাদের এই গণ–অভ্যুত্থান।