বকশীগঞ্জে শহরে ১২ ঘন্টা, গ্রামে ৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ, তীব্র লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন! – দৈনিক আজকের জামালপুর

বকশীগঞ্জে শহরে ১২ ঘন্টা, গ্রামে ৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ, তীব্র লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন! – দৈনিক আজকের জামালপুর




বকশীগঞ্জে শহরে ১২ ঘন্টা, গ্রামে ৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ, তীব্র লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন! – দৈনিক আজকের জামালপুর



জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু : জামালপুরের বকশীগঞ্জে ঘন ঘন লোডশেডিং আর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। তীব্র লোডশেডিং এর কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। কবে নাগাদ বিদ্যুত সমস্যার সমাধান হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে গ্রাহকরা। তবে পিডিবি-পল্লী বিদ্যুত সমিতির মধ্যে লোড বৈষম্য দূর হলে লোডশেডিং কমবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। ঘন ঘন লোডশেডিং আর তীব্র গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস নেমে এসেছে। প্রতিদিন ১৭ থেকে ২০ ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন সকল পেশার মানুষ। এভাবে চলতে থাকলে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে সকল খাতে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বকশীগঞ্জ জোনাল অফিসের আওতাধীন পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। ৯ টি ফিডারে এসব গ্রাহককে সেবা দিয়ে থাকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বকশীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াত বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতির কারণে প্রতিদিন বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৬ থেকে ৭ মেঘাওয়াট। যা চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম। এর মধ্যে শুধুমাত্র পৌর শহরের ফিডার (বিদ্যুৎ পরিচিতি লাইন) ছাড়া বাকি ফিডার গুলোতে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীরা রয়েছে চরম বিড়ম্বনায়। এতে শ্বাসকষ্ট রোগী, হাাঁপানী রোগীদের নেবুলাইজার করতে সমস্যা হচ্ছে। তীব্র গরম ও চরম লোডিংয়ের কারণে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুত পর্যাপ্ত না থাকায় ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প চরম হুমকির মুখে রয়েছে। বিশেষ করে অটো রিকশা ও অটো ভ্যান চালকরা ব্যাটারী চালিত অটো গুলোতে পর্যাপ্ত চার্জ করতে না পারায় গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছেন না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পৌর শহরে গড়ে ১২ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও গ্রামাঞ্চলে ১৭ থেকে ২০ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। কখন বিদ্যুত আসে আর কখন চলে যায় তা বলতে পারেন না গ্রামের মানুষ গুলো। ফলে চলতি মৌসুমের রোপা আমন চাষ নিয়ে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। কৃষকরা মর্টর ব্যবহার করতে না পারায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিন ব্যবহার শুরু করেছেন। এতে করে ফসলের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। ফলে রোপা আমন চাষে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। তবে বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের দাবি, পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুতের এলাকায় লোড বৈষম্য থাকায় পল্লী বিদ্যুৎ এরিয়াতে চরম লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। এই বৈষম্য দূর হলে আনুপাতিকহারে লোডশেডিং কমবে বলে জানান তিনি। পিডিবি এলাকায় তুলনামূলক লোডশেডিং অনেক কম। কিন্তু বৈষম্যের কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ এর গ্রাহকরা। তবে সব সমস্যার সমাধান করে দ্রুত বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ জানান, যেভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে তাতে জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা যাওয়া অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। তাই দ্রুত এর সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। বকশীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের ডিজিএম জয় প্রকাশ নন্দী জানান, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ না থাকায় লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে লোডশেডিং অনেকটায় কমে যাবে। অবিলম্বে বিদ্যুতের লোডশেডিং এর সমস্যা সমাধান করে জনজীবন স্বাভাবিক করবে কর্তৃপক্ষের নিকট এমনটায় প্রত্যাশা ভুক্তভোগী সহ সাধারণ মানুষের।


Explore More Districts