সিলেটের ওসমানীনগরে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হামলায় এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন নারীসহ আরও ১৫ জন। আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলেন- অভিযুক্ত একই গ্রামের মখই মিয়ার পুত্র বাদশা মিয়া, কাদির মিয়া ও তার পুত্র শাহিন মিয়া।
নিহত আনোয়ার হোসেন (৪৫) উছমানপুর ইউনিয়নের বেতখাই গ্রামের শফিকুর রহমানের পুত্র। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বেতখাই গ্রামের জিলু মিয়া ও তার চাচাত ভাই গনি মিয়া ও কাদির মিয়ার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জুম্মার নামাজের পর জিলু মিয়া তার মেয়ের কবর জিয়ারত করে প্রতিপক্ষের নির্মাণাধীন ঘরের সামনে দিয়ে আসার সময় তাকে কাদির মিয়া নিষেধ দিলে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও সংঘর্ষ হয়।
এসময় উভয় পক্ষ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্যা বদরুলের দারস্থ হলে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) এই বিষয়টি মিমাংসার জন্য দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টার দিকে গণি মিয়া, বাদশা মিয়া, কাদির মিয়া, সুমেল মিয়া, সালমান মিয়া, শাহিন মিয়া, তুফায়েল মিয়াসহ আরও কয়েকজন অতর্কিতভাবে জিলু মিয়াসহ তাদের পক্ষের লোকজনের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলার সময় আনোয়ার হোসেন গরু নিয়ে মাঠে যাচ্ছিলেন। সেখানে গিয়ে তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপালে ঘটনাস্থলে আনোয়ার গুরুতর আহত হন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় আনোয়ারসহ আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আনোয়ার হোসেন মারা যান। হামলায় জিলু মিয়া, তার স্ত্রী হেনা বেগম, ছেলে রাসেল মিয়া, জাকির মিয়ার ছেলে মাহিদ ও নুরুল হোসেন, শফিকুরের পুত্র কবির হোসেন, নাছিমা বেগম, হাছনা বেগম, নিহত আনোয়ারের স্ত্রী রুমি বেগম ও মিজানুর রহমানসহ প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া আহত জিলু মিয়া ও তার পুত্র রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
এব্যাপারে উসমানপুর ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্যাহ বদরুল বলেন, বেথখাই গ্রামে চাচাত ভাইদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি আগামী রোববার স্থানীয়দের নিয়ে মিমাংসা করার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই প্রতিপক্ষের হামলায় একজন নিহত হন। আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করি।
এবিষয়ে ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করেছে। বাকি অভিযুক্তদের আটকের অভিযান চলছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হবে।