এইচ এম আলাউদ্দিন ঃ শখ থেকেই সফলতা। শখকে সম্বল করে স্বনির্ভর হয়ে দেখালেন কেশবপুরের নিভৃত পল্লীর বাসিন্দা মেহেদী হাসান নয়ন। বাড়ির উঠোনে রীতিমতো চমক লাগিয়ে চাষ করছেন বিভিন্ন রঙের ছোট বড়ো মাছ। ঘরের অ্যাকুরিয়ামে লাল, নীল মাছ অনেকেই বাড়িতে পোষেন নেহাত শখের কারণে। মাত্র ২০টি গাপ্পি মাছ দিয়ে শখের বশে শুরু করলেও উদ্যোক্তা নয়ন কিন্তু এই শখকেই ব্যবসা হিসেবে নিয়ে সাফল্য পেয়েছেন।
শখের বশে শুরু করলেও উদ্যোক্তা কেশবপুরের মেহেদি হাসান নয়নের নয়ন কালার ফিস ফার্ম এখন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বড়ই চমক। বাড়ির সামনে কংক্রিটের হাউজ ও পুকুরে করছেন বিভিন্ন রঙিন মাছের চাষ। এর মাধ্যমে নয়ন নিজে যেমন স্বাবলম্বী হয়েছেন তেমনি তার দেখাদেখি শতাধিক যুবকও একই পথের পথিক। হতাশাকে পেছনে ফেলে তাদের এখন শুধুই এগিয়ে চলার স্বপ্ন। তিনি শোনালেন মামাতো ভাইয়ের কাছ থেকে ২০টি গাপ্পি মাছ নিয়ে যাত্রা শুরুর আট বছরের মাথায় এখন ২০ লক্ষাধিক টাকার মালিক হওয়ার গল্প।
সাতক্ষীরার মামাতো ভাইয়ের এ্যাকুরিয়াম দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন কেশবপুরের মেহেদী হাসান নয়ন। ২০টি গাপ্পি মাছ এনে এক ফুট চওড়া ও এক ফুট লম্বা বিশিষ্ট এ্যাকুরিয়াম তৈরি করে তাতে মাছগুলো ছাড়েন। সখের মাছগুলো আনন্দ ছড়াতে থাকে। একদিন সেখানে হর্নেট নামক এক প্রকার গাছ দিলে মাছগুলো আরও সুন্দর দেখায়। ধীরে ধীরে সেগুলো ব্রিডিং শুরু কওে, বাচ্চা দেয়। ইতোমধ্যে ইউটিউব দেখে রঙিন মাছের পরিচর্চার বিষয়টিও শিখে যান নয়ন। খাবার গুড়া করে দেন বাচ্চা মাছগুলোকে। ধীরে ধীরে মাছের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পরীক্ষামূলকভাবে কেশবপুর থেকে একদিন কিছু মাছ নিয়ে আসেন খুলনায়। নগরীর ফুল মার্কেটের ‘মৎস্য মেলা’ নামক দোকানে সেগুলো দেখানোর পর তারা সেগুলো কিনে রাখেন। পাশাপাশি নয়নকে আরও উৎসাহ দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে তিনি ওই মাছ থেকে আরও বৃদ্ধির জন্য মাটির চাড়িতে চাষ শুরু করেন। সেখানেও আরও বাচ্চা হয়। সেগুলো আবার বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে থাকেন। এভাবেই ধীরে ধীরে তিনি মাটির চাড়ি ছেড়ে রঙিন মাছের বাণিজ্যিক চাষকে আরও বৃহৎ আকারে করার চিন্তা করেন। কেশবপুর হাসপাতাল রোডের মুলগ্রাম বটতলার পৈত্রিক বাড়ির ১০ শতক জমিতে তিনি কনক্রিটের হাউজ তৈরি করেন। ওই বাড়িতেই তার এখন ২৮টি হাউজ। সাত ফুট দৈর্ঘ্য ও পাঁচ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট হাউজ ছাড়াও দু’টি হাউজ রয়েছে বড়। যেখানে ব্রিডিং বা বাচ্চা জন্ম দেওয়া হয়। এর বাইরেও পাশর্^বর্তী অন্য একটি জায়গায় তিনি আরও কিছু হাউজ করে করছেন বাণিজ্যিকভাবে রঙিন মাছের চাষ। রয়েছে তিনটি পুকুরও। সব মিলিয়ে কেশবপুরের মেহেদি হাসান নয়ন এখন ওই এলাকার আলোচিত ও তরুণ উদ্যোক্তা।
নয়নের দেখাদেখি খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা অঞ্চলের অন্তত: শতাধিক যুবকও রঙিন মাছের চাষ শুরু করেছেন। তাদের সরবরাহকৃত রঙিন মাছই এখন খুলনাঞ্চলের বিভিন্ন এ্যাকুরিয়ামে শোভা পাচ্ছে। কিনছেন সৌখিন মানুষেরা।
নয়নের মাধ্যমে অনেকেই আজ স্বপ্ন দেখছেন সমাজ পরিবর্তনের। নিজেদের পরিবারে নয়নরা এখন আর বোঝা নয়, বরং আশির্বাদ।
মেহেদি হাসান নয়নেরই এক বন্ধু আলী রেজা। কেশবপুর বাজারেই তার মুদি দোকান। সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায় তিনিও কিছু মাছ নিচ্ছেন নয়নের ফার্ম থেকে। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ্যাকুরিয়ামে রঙিন মাছ রাখলে দোকানের সৌন্দর্য বেড়ে যায়। এজন্য তিনি এসেছেন বন্ধুর ফিস ফার্ম থেকে মাছ সংগ্রহের জন্য। তিনি বলেন, বন্ধু নয়নের মাধ্যমে অনেক যুবকই আজ নতুন কর্মসংস্থানের সন্ধান পেয়েছে। এটি তার জন্যও আনন্দের।
নয়ন কালার ফিস ফার্মের প্রোপ্রাইটর ও উদ্যোক্তা মেহেদি হাসান নয়ন নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, কেউ যদি এমন ফার্ম করতে চান তাহলে তিনি তাকে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা দেন। অল্প পূঁজিতে বেশি লাভ যেসব ব্যবসায় তার মধ্যে রঙিন মাছের চাষ একটি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
উৎপাদিত মাছগুলো বিক্রির ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারও কাছে মাছ থাকলেই হলো। বিক্রির জন্য চিন্তা করতে হবে না। প্রথমত: বিষয়টি এমনিতেই জানাজানি হয়ে যায়। তাছাড়া এখন অনলাইনের যুগ। তার নিজেরও রয়েছে ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ। মোবাইল নম্বরের পাশাপাশি আছে হোয়াটসএ্যাপ নাম্বারও। সুতরাং যে কোনভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তার সাথে যোগাযোগ করে মাছের অর্ডার দেওয়া হয়। তিনিও সেগুলো বিভিন্ন পরিবহণযোগে পাঠিয়ে দেন ক্রেতাদের কাছে। আর টাকা পাঠানোও হয় বিকাশ বা অন্য কোন মাধ্যমে। অর্থাৎ সব কাজেই চ্যালেঞ্জ আছে কিন্তু রঙিন মাছে খুব বেশি চ্যালেঞ্জ নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। শুধুমাত্র শীতকাল একটু মাছের জন্য ঝুঁকি। এছাড়া সারাবছরই এ মাছ চাষ করা খুবই সহজ। সময়ও ব্যয় করতে হয় খুব কম।
Explore More Districts
- Khulna District Newspapers
- Chattogram District Newspapers
- Dhaka District Newspapers
- Barisal District Newspapers
- Sylhet District Newspapers
- Rangpur District Newspapers
- Rajshahi District Newspapers
- Mymensingh District Newspapers
- Gazipur District Newspapers
- Cumilla district Newspapers
- Noakhali District Newspapers
- Faridpur District Newspapers
- Pabna District Newspapers
- Narayanganj District Newspapers
- Narsingdi District Newspapers
- Kushtia District Newspapers
- Dinajpur District Newspapers
- Bogura District Newspapers
- Jessore District Newspapers
- Bagerhat District Newspapers
- Barguna District Newspapers
- Bhola District Newspapers
- Brahmanbaria District Newspapers
- Chuadanga District Newspapers
- Chandpur District Newspapers
- Chapainawabganj District Newspapers
- Coxs Bazar District Newspapers
- Feni District Newspapers
- Gaibandha District Newspapers
- Gopalganj District Newspapers
- Habiganj District Newspapers
- Jamalpur District Newspapers
- Jhalokati District Newspapers
- Jhenaidah District Newspapers
- Joypurhat District Newspapers
- Kurigram District Newspapers
- Kishoreganj District Newspapers
- Khagrachhari District Newspapers
- Lakshmipur District Newspapers
- Lalmonirhat District Newspapers
- Madaripur District Newspapers
- Magura District Newspapers
- Manikganj District Newspapers
- Meherpur District Newspapers
- Naogaon District Newspapers
- Munshiganj District Newspapers
- Moulvibazar District Newspapers
- Narail District Newspapers
- Natore District Newspapers
- Netrokona District Newspapers
- Nilphamari District Newspapers
- Panchagarh District Newspapers
- Patuakhali District Newspapers
- Pirojpur District Newspapers
- Rajbari District Newspapers
- Rangamati District Newspapers
- Satkhira District Newspapers
- Shariatpur District Newspapers
- Sherpur District Newspapers
- Sirajganj District Newspapers
- Sunamganj District Newspapers
- Tangail District Newspapers
- Thakurgaon District Newspapers