বগুড়া শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় করতোয়া নদীর প্রাণ ফিরে পেতে দিন ব্যাপী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার (৯ অক্টোবর) বগুড়া জেলা পুলিশের আয়োজনে দিনব্যাপী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে নদীর দুই পাড়ে হাজারও মানুষের ঢল নামে।বেলা ১১টায় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয় এবং বিকেল ৫ টায় পুরুস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে কয়েক হাজার নারী পুরুষ ও শিশু দর্শনার্থীরা এসে ভিড় করেন। শহরে মালতিনগর এসপি ব্রিজ থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বেজোড়া ব্রিজ পর্যন্ত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা চলে।
প্রতিযোগিতায় বগুড়ার গাবতলী, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলার ৮টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। পরে চারটি দল উড়াল পঙ্খি, সততা, কিং খান এবং ‘রাখে আল্লা মারে কে’ সেমিফাইনালে প্রতিযোগিতা করে। তাদের মধ্যে থেক উড়াল পঙ্খি বনাম সততার মধ্যে ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়। এতে গাবতলী উপজেলার বালিয়াদিঘীর কালাইহাটা গ্রামের উড়াল পঙ্খি দল বিজয়ী হয়।
নৌকা বাইচ প্রতিয়োগিতায় বিজয়ী দলকে ট্রফিসহ একটি বড় ষাড় গরু এবং ২য় স্থান অর্জনকারী দল কে একটি বড় খাসি পুরস্কার দেয়া হয়।
বগুড়ার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহযোগিতায় ‘নদী বাঁচলে পরিবেশ বাঁচবে’ এই স্লোগানে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মাদ শফিউল আজম উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, আমাদের একটাই কাজ এখন করতোয়া নদীকে সঠিকভাবে রক্ষা করা। যত বড় শক্তিশালীই হোক তার বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে আমরা লড়াই করে করতোয়ার প্রাণ ফিরিয়ে আনব।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, সকলের সহযোগিতায় এর আগে করতোয়া নদীর কচুরিপানা অপসারণ করা হয়েছে। নদীর প্রবাহে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী এই করতোয়া নদী। নদীর নাব্যতা ফেরাতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও করতোয়া নদী সংরক্ষণে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সেটি অনুমোদন হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করি নদী বাঁচলে পরিবেশ বাঁচবে। তাই এই নদী সংরক্ষণে আমাদের সবার সচেতন হতে হবে।