প্রাথমিক শিক্ষা ঝরে পড়া ও আমাদের করণীয়
নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া ও আমাদের করণীয় এ বিষয়ে জনাব মোঃ মাসুদ করিম ( ইন্সট্রাক্টর) উপজেলা রিসোর্স সেন্টার, ডিমলা, নীলফামারী। তাঁর গবেষণায় দেখা যায়
আমাদের দেশে প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া একটি উৎকণ্ঠার বিষয়। তবে ২১ জুন ২০২৩ তারিখে প্রকাশিত হয় বর্তমানে ঝরে পড়ার হার ১৪.১৫ শতাংশ (সূত্র: স্বাধীন বাংলা, ই-পেপার ২১ জুন ২০২৩ খ্রি:) যা অত্যন্ত ইতিবাচক। এ সমস্যা হতে পরিত্রান পাওয়া অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। ঝরে পড়া রোধের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু গঠনমূলক কার্যক্রমও চালু রয়েছে। যেমন- মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ, স্কুল ফিডিং, হোম ভিজিট, উঠান বৈঠক ইত্যাদি।
স্কুল ফিডিং কার্যক্রম বর্তমানে অনিয়মিত। এ সকল কার্যক্রম ঝরে পড়া রোধে অন্যতম উপায়। অন্যান্য কার্যক্রমগুলো সব বিদ্যালয়ে নিয়মিত হয়না। হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয়না। তবে স্কুল ফিডিং এবং হোম ভিজিট ঝরে পড়া রোধে খুবই কার্যকর উপায়। আমি নিজেও বেশ কিছু হোম ভিজিট করেছি, এখনও করছি। বাসা-বাড়িতে সাধারণত মায়েদেরই পাওয়া যায়। মায়েদের সঙ্গে আলোচনায় দেখা যায়, তারা সন্তানের লেখাপড়ায় কতটা অসচেতন। অনেক বাবা-মা সন্তান স্কুলে গেছে কি না তাও বলতে পারেন না।
এজন্য প্রয়োজন কার্যকর হোম ভিজিট, মা ও অভিভাবক সমাবেশ। বিশেষ করে প্রয়োজন মায়েদের সচেতন করা। আমাদের আরও কিছু কৌশল হাতে নিতে হবে। আমাদের দেশে পিছিয়ে পড়া এলাকায়,বিশেষ করে ফসলের বীজ বপন এবং মাড়াই মৌসুমে স্কুল ফিডিং কর্মসূচী জোরদার করতে হবে। বিভিন্ন খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের আয়োজন করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের পরিকল্পনা করে অংশগ্রহণ করাতে হবে। শিক্ষার্থীদের বাবা-মা বা অভিভাবককে অন্তত: একটি করে কার্যক্রমে, যেমন খেলায় অংশগ্রহণ করালে খুবই ভালো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমন্ত্রণ করলে আরও ভালো হয়। সর্বোপরি প্রয়োজন পাঠদানে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। এ সমস্ত উপায় অবলম্বন করলে আমাদের বিদ্যালয়গুলো হবে প্রাণবন্ত, সফল হবো ঝরে পড়া রোধে। আমরা বাঙ্গালী, বাংলাদেশী। আমরা বীরের জাতি।
নয় মাসে দেশ স্বাধীন করেছি। লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছেন দেশের জন্য, লক্ষ লক্ষ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। ঝরে পড়া রোধে জীবন তো আর দিতে হবে না, হবে না সম্ভ্রমও হারাতে। তাহলে চলুন ঝরে পড়া শূন্য শতাংশ বা এর কাছাকাছি নিয়ে আসি। শুধু প্রয়োজন একটু সময় এবং একটি শিক্ষিত এবং সচেতন পিতা-মাতা বা অভিভাবক প্রজন্ম। সফলতা আসবেই।