রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন এবং টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) রাজবাড়ী কর্তৃক “তথ্যের অবাধ প্রবাহে ইন্টারনেটের গুরুত্ব” -এই প্রতিপাদ্যে নিয়ে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২৩ আলোচনা সভা এবং পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা কালচারাল অফিসার প্রার্থ প্রতীমের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন, সনাক সভাপতি প্রফেসর মোঃ নুরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুবর্ণা রানী সাহা, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, রাজবাড়ী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান লাবু প্রমুখ। সভায় জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর সাইদুল ইসলাম তথ্য অধিকার বিষয়ক একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। টিআইবি সনাক কর্তৃক রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত ৬৫টি সরকারী দপ্তর সমূহের উপর পরিচালিত একটি ওয়েব পোর্টাল পর্যবেক্ষনের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মাসুদ আহমেদ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে টিআইবি এবং সনাকের তথ্য অধিকার আহন প্রচার এবং বাস্তবায়নে সহায়তার কার্যক্রমের স্বীকৃতি স্বরুপ একটি সম্মাননা ক্রেস্ট জেলা প্রশাসক সনাক সভাপতি প্রফেসর মোঃ নুরুজ্জামান এবং টিআইব এর এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মাসুদ আহমেদ এর হাতে তুলে দেন। এরপর টিআইবি সনাকের পর্যব্ক্ষেনের ভিত্তিতে শতভাগ হালনাগাদ থাকা ১৭ টি প্রতিষ্ঠানকে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান দপ্তর প্রধানদের তুলে দেন জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান।
আলোচনা সভায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২৩: টিআইবির পক্ষ যেসকল থেকে আহŸান জানানো হয়-
সরকারি ও বেসরকারি সকল ওয়েবসাইট যেন হালানাগাদ, সুবিন্ন্যস্ত, আকর্ষণীয় ও ইন্টারঅ্যাকটিভ হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য প্রকাশ ও তথ্যে অভিগম্যতার সুবিধার্থে ডিজিটাল টুলসের ব্যবহারের উপযোগী অবকাঠামোগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষ করে, গ্রাম পর্যায়ে সুবিধাবঞ্চিত সকল জনগোষ্ঠীসহ সাধারণ নাগরিকের অভিগম্যতা বৃদ্ধির জন্য সুনির্দিষ্ট স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। ডিজিটাল ডিভাইড প্রতিহত করে সকল নাগরিকের জন্য সমান ডিজিটাল অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯Ñ এর পরিপন্থি বিদ্যমান আইনসমূহ সংস্কার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল করতে হবে, নতুন কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থি বা আইনটির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো ধারা যাতে সংযোজিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী তথ্য প্রাপ্তির জন্য আবেদনকারীর তথ্য প্রাপ্তি ও নিরাপত্তাসহ আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিধান করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জ্ঞান ও তথ্য প্রদানে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কারিগরি ও অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তথ্য প্রদানে আগ্রহ সৃষ্টির আরো কার্যকরি প্রণোদনামূলক উদ্যোগ নিতে হবে। তথ্য অধিকার আইনের অধিকতর বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রমে সুশীল সমাজ, জনগণ ও গণমাধ্যমের কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের কার্যকরতা বৃদ্ধিতে তথ্য কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তথ্য প্রকাশ ও প্রচারে প্রতিষ্ঠানসমূহের দক্ষতা ও সংগতি পর্যবেক্ষণের জন্য তথ্য কমিশনের তদারকি বাড়াতে হবে। বেসরকারি সংস্থা ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে তথ্য কমিশনের সহযোগিতা ও অংশীদারত্বমূলক কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে হবে। সর্বোপরি, তথ্য অধিকার নিশ্চিতে গণমাধ্যমকে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ, সুশীল সমাজ, তথ্য কমিশন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।