তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে | দৈনিক মাথাভাঙ্গা

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে | দৈনিক মাথাভাঙ্গা

স্টাফ রিপোর্টার: কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা শহরের সাহিত্য পরিষদ চত্বর (শহীদ আলাউল ইসলাম অ্যাসোসিয়েশন হল) থেকে একদফা দাবিতে এ পদযাত্রার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। পদযাত্রাটি শহরের কলেজ রোড হয়ে, কোর্ট মোড় দোয়েল চত্বর হয়ে পুরাতন হাসপাতাল রোড, বড় বাজার চৌরাস্তার মোড় তথা শহীদ হাসান চত্বর হয়ে একই রাস্তা দিয়ে সাহিত্য পরিষদ চত্বরে পুনরায় সাহিত্য পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়।

এদিকে জেলা বিএনপির পদযাত্রা ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে পুলিশ প্রশাসন। সকাল থেকেই পদযাত্রা আরম্ভের স্থান তথা সাহিত্য পরিষদ চত্বরসহ পুরো শহরেই দেখা যায় পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি। সকাল ১০টা থেকেই বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা পদযাত্রা উপলক্ষ্যে মিছিল সহকারে আসতে শুরু করে সাহিত্য পরিষদ চত্বরে। জেলা বিভিন্ন স্থান থেকে করিমন, নছিমন, ইজিবাইক, পাখিভ্যান, প্রাইভেট ও মাইক্রোকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। চুয়াডাঙ্গা ভি.জে স্কুল (চাঁদমারী মাঠ) ও শহরের বিভিন্ন স্থানে এসব যাবহন রেখে নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে সাহিত্য পরিষদ চত্বরে পৌঁছুতে শুরু করে। সাহিদ্য পরিষদ চত্বরসহ কলেজ রোডে বিএনপির নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এ সময় রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি যাতে না হয়, সেজন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তার একধার খোলা রাখতে নিজেরাই উদ্যোগী হয়।

দেখা যায়, লাইন দিয়ে হাত ধরে দাঁড়িয়ে রাস্তার আরেক পাশ ক্লিয়ার করে রেখেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফের নেতৃত্বে পদযাত্রা আরম্ভ হলে বিশাল রূপ নেয় পদযাত্রাটি। বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সেøাগান ও ফেস্টুন, প্লেকার্ড, ব্যানার হাতে নিয়ে অংশ নেয়। সকল রাজবন্দীদের মুক্তি চাই, এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এসব বিভিন্ন দাবি সম্বলিত লেখা দেখা যায়। পদযাত্রাটি রুপ নেয় বিশাল দৈর্ঘ্যরে। বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরে যখন পদযাত্রার সর্ব সামনের মাথা তখন ঠিক কোর্ট মোড়ের দোয়েল চত্বরে পদযাত্রার শেষ মাথা লক্ষ্য করা যায়। এ পদযাত্রা উপলক্ষ্যে শহরের কলেজ রোড, পুরাতন হাসপাতাল রোড ও শহীদ আবুল কাশেম সড়ক বেশ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখে ট্রাফিক পুলিশ। একদিক থেকে পদযাত্রা বের হলে অন্যদিকে রাস্তা খুলে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। তবে, পদযাত্রাটি বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর তথা চৌরাস্তার মোড় পৌঁছুলে পুলিশের বাধার মুখে ওখান থেকেই পুনরায় ঘুরতে হয়। পুরো পদযাত্রার সময়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ ও সদর থানা পুলিশের একাধিক টিম পদযাত্রার সামনে এবং পেছনে অবস্থান করে। পদযাত্রা শেষে সাহিত্য পরিষদ চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত উপ-কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবু। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে বলে জোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তা না হলে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। ঐক্যবদ্ধ থেকে আমাদের দাবি আদায় করে নিতে হবে।  বাবু খান বলেন, ‘আমাদের দাবি একটায়, এ দাবি আমাদের দলের দাবি নয়, এ দাবি জনগণের। যে সরকার ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকে, আবার তারাই বলে বিএনপি দেশের উন্নয়ন চায় না। বর্তমান ভোটচোর সরকার একবার কৌশল করে আর দুইবার সরাসরি ভোট চুরি করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় রয়েছে। ভোটচুরি করে এসেছে বলেই জনগণের ক্ষমতায় এরা বিশ্বাস করে না। উন্নয়নের ছোঁয়া দেশে বয়ে যাচ্ছে বলে এরা প্রচার করে, কিন্তু যখনই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দেশের নির্বাচনের কথা ওঠে তারা সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে দেয় না। সংবিধানের দোহায় দেয়। আমরা সংবিধান বিরোধী না। আমাদের প্রশ্ন কোন সংবিধানের আওতায় আজ আপনারা ক্ষমতায় আছেন? ২০০৮ সালে দেশে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংবিধানে ছিলো। সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আপনারা ক্ষমতায় এসে সংবিধান বদল করে দিয়েছেন। নিরপেক্ষ সরকারে অধিনে দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোটরে দাবি, জনগণের দাবি এই দাবি নিয়ে আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দলোন করবো। আপনারা দেশের স্বার্থে সকল আন্দলনে অংশগ্রহণ করবেন।’

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো শরীফুজ্জামান শরীফের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও জীবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক আবু, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আজিজুর রহমান পিন্টু, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মনি, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম নজু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক রোকন, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ও চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিতুল্লাহ মহলদার জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও জীবনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও জীবনগর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও জীবননগর পৌর সমন্বয়ক নেতা শাহাজাহান আলী, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আবুল হোসেন তোহা, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য নুরনবী সামদানী, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুর হাসান পল্টু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ও বাড়াদী ইউপি চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জাহানারা বেগম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক শফিকুল ইসলাম পিটু, জেলা জাসাস এর সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব মাওলনা আনোয়ার হোসেন, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিন প্রমুখ। পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া, কুতুবপুর, শংকরচন্দর, পদ্মবিলা, মোমিনপুর, মাকালডাঙ্গা ইউনিয়ন, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ড, আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া, গাংনী, বাড়াদী, জেহালা, চিতলা, খাদিমপুর, কালিদাসপুর, ডাউকি, জামজামী, বেলগাছি, খাসকররা, নাগদাহ, আইলহাস, কুমারী, হারদী, আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ড জীবনগর উপজেলার মনোহরপুর, উথলী, আন্দুলবাড়িয়া, বাঁকা, সীমান্ত, হাসাদাহ, জীবনগর পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ড, দর্শনা থানার তিতুদহ, বেগমপুর, কুড়ালগাছি, পার-কৃষ্ণপুর-মদনা, নেহালপুর, গড়াইটুপি, দর্শনা পৌর, ৯টি ওয়ার্ড, দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর, দামুড়হুদা সদর, নতিপোতা, র্কাপাসডাঙ্গা, হাউলী ইউনিয়নসহ চুয়াডাঙ্গা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিএনপির নেতাকর্মীরা।

Explore More Districts