মো. ওয়ালী উল্লাহ সরকার, জামালগঞ্জ
একদিকে তীব্র গরম আর অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিং- সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমের সাথে লোডশেডিং মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। প্রচ- আঁচে গা পুড়ে যায় যায় অবস্থা। টানা দাবদাহ ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন। গরম স্বস্তি পেতে অনেকেই ঘন ঘন ঠান্ডা পানি পান করছেন। অনেকে আবার মাথায় পানি দিচ্ছেন। কেউ কেউ করছেন একাধিক বার গোসল। এদিকে সারাদিন খাটুনির পর রাতে স্বস্তির ঘুম থেকে বঞ্চিত থাকছে মানুষ। রাতেও মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে। তীব্র গরমে দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষুব্ধ মানুষ। এছাড়াও জীবিকার তাগিদে যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন, তাদের অবস্থা শোচনীয়। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ।
এদিকে দেশের ওপর দিয়ে যে তাপপ্রবাহ চলছে, তা আরও পাঁচ-ছয় দিন চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আর জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
জামালগঞ্জে দিনে দিনে ৬ থেকে ৭ বার, আবার কোন কোন এলাকায় ৮ থেকে ১০ বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে। কোন কোন এলাকায় টানা ৩ থেকে ৪ ঘন্টার বেশী লোডশেডিং হচ্ছে। এতে কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন কাজে চরম ব্যাঘাত ঘটছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছে, বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। বেচাকেনার সময়ও বিদ্যুৎ না থাকায় অলস সময় পার করতে বাধ্য হচ্ছেন। পিক আওয়ারে অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতারা আসছেন না, কমে গেছে বেচা কেনা।
জামালগঞ্জ সদরের বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, তীব্র গরমের মধ্যেও দিনে ৫-৬ বার বিদ্যুৎ চলে যায়, এজন্য মাঝে মধ্যে বাসায় পানি সংকট দেখা দেয়। একদিকে গরম অন্যদিকে লোডশেডিং, মশার উপদ্্রব, তার সঙ্গে দেখা দিয়েছে পানির সংকট। এই সব নিয়েই আমরা দিন পার করছি।
সাচনা বাজারের ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ আল আজাদ বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৮-১০ বার বিদ্যুৎ যায়। প্রতিবার দুই থেকে তিন ঘন্টা লোডশেডিং থাকে। রাতের অবস্থা আরো ভয়াবহ।
তেলিয়া নতুন পাড়া নিবাসী নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল লেইছ বলেন, সারাদিন কতবার বিদ্যুৎ যায় তার হিসাব নেই। পনের দিন ধরেই শুধু রাতেই ৪-৫ ঘন্টা লোডশেডিং চলে। গরমে বাচ্চারা ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না। ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় মারাত্মক বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে।
জামালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, আমাদের চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। বৈশি^ক জ¦ালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় সারাদেশের মতো জামালগঞ্জেও চাহিদার তুলনায় ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। এলাকা ভিত্তিক বিদ্যুতের রেশনিং চলছে। এতে করে পর্যায়ক্রমে ১ঘন্টা করে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এতে একই এলাকা দিনে ও রাতে ৫-৬ বার লোডশেডিংয়ের আওতায় পড়েছে।
