রাঙামাটি জেলায় কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসা জমিরধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। আশানুরূপ ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে তৃপ্তির ঝলক। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
রাঙামাটি সদরের রাঙাপানি, আসামবস্তি ও ঝগড়াবিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে কৃষকরা মাঠে পেকে যাওয়া আগাম জাতের সোনালি ধান কাটছেন। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিকরাও।
জানা গেছে, এবার জেলার নানিয়ারচর, লংগদু, বরকল, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, রাঙামাটি সদর, বাঘাইছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলার জলে ভাসা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-৮১ ও ব্রি-৯২ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বেশিরভাগ জমির ধানই পাকতে শুরু করেছে। কাপ্তাই হ্রদে পানি আসার আগেই ধান ঘরে তুলতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন কৃষক। কাপ্তাই হ্রদে পানি কম থাকায় যথাসময়ে পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছে।
এই বিষয়ে আরও
ঝগড়াবিল এলাকার কৃষক জীবক বিকাশ চাকমা জানান, আমার চার একর জলে ভাসা জমিতে প্রায় ৬০ কেজি বোরো ধান রোপণ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি ৮০ থেকে ৯০ মণের মত ধান পাবো। রাঙাপানি এলাকার কৃষক শান্তিময় চাকমা জানান, কাপ্তাই হ্রদে পানি কম থাকায় ধানের চাষাবাদ ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় পাকা ধান কাটা শুরু করেছি। আশা করছি, এবার লাভের মুখ দেখব।
রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদ সংশ্লিষ্ট প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জলে ভাসা জমি আছে। এসব জলে ভাসা জমি হ্রদের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আগে ধান কেটে ফেলতে হয়। এজন্য এসব জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-৮১ ও ব্রি-৯২ ধান রোপন করা হয়।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, কাপ্তাই হ্রদে পানি কম থাকায় জলে ভাসা জমিতে এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-৮১ ও ব্রি-৯২ ধান রোপন করার কারণে কৃষকরা দ্রুতসময়ে ধান ঘরে তুলতে পারছেন। এ বিষয়ে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
সাধারণতঃ প্রতিবছর শীত মৌসুম শেষ হওয়ার পরপরই কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে যায়। ফলে জেগে উঠা জমিতে কৃষকরা চাষাবাদ শুরু করেন। এ চাষাবাদের মেয়াদকাল পুনরায় কাপ্তাই হ্রদে পানি আসা পর্যন্ত অর্থাৎ এপ্রিল-মে পর্যন্ত বলবৎ থাকে। এই সময়ে এসব জলে ভাসা জমিতে ধান, তরমুজ, শাক সবজিসহ নানা মৌসুমি শস্য চাষাবাদ করা হয়।