ফেনী | তারিখঃ August 17th, 2022 | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 1882 বার

সদর প্রতিনিধি->>
ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের মমতাজ মিয়ার বাজারে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। ১৫ আগস্ট সোমবার রাতে তার পায়ে অপারেশন হয়েছে বলে পরিবার সূত্র নিশ্চিত করেছে। এঘটনায় বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার মমতাজ মিয়ার বাজারের ব্যবসায়ী ফ্যামেলী সুপার সপের মালিক নাজিম উদ্দিনের উপর শুক্রবার রাতে অতর্কিত হামলা চালায়। ধলিয়ার দিক থেকে ৪-৫টি সিএনজি অটোরিকশা ও ৮-১০টি মোটরসাইকেল যোগে ৩০-৪০ জন দোকান ঘেরাও করে দোকানে প্রবেশ করে হকিস্টিক, রড, এসএসের মোটা পাইপ ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।
এতে তার মাথা ফেটে যায়, ডান পা ভেঙে যায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায়। হামলায় ধলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মীর হোসেন হৃদয়, মমতাজ মিয়ার বাজার কমিটি সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মিয়া মেম্বারের ছেলে আমজাদ হোসেন নিকেল (২৪), আবদুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান সাইমন (২২), ধলিয়ার হাফেজ আহামদের ছেলে হানিফ রাজু ও মজুপুরের রফিকুল ইসলামের ছেলে একরামুল হক আরিফের নেতৃত্বে প্রায় ৩০-৪০ জন ছাত্রলীগ কর্মী।
তার শোর চিৎকারে বাজারের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পিছু হটে। একপর্যায়ে নাজিমকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করে। কি কারণে এ হামলা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায়নি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানায়, এ ব্যাপারে কোথাও কোন আলাপ না করার জন্য তাদেরকে শাসাচ্ছে। কোথাও কিছু বললে পরিণতি নাজিমের মত হবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
নাজিম উদ্দিনের ছোট ভাই এমরানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ঐ সময় বাজারেই অবস্থান করছিলেন। দৌড়ে এসে দেখেন হামলাকারীরা চলে যাচ্ছে তার ভাই নাজিম গুরুতর আহত অবস্থায় চিৎকার করছে। তিনি স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তার ভাইকে চিকিৎসা দিয়ে সিএনজিযোগে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
তিনি জানান, তার পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে মামলা না করার জন্য বিভিন্ন মহল চাপ দিচ্ছে। এতে তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এমরান আরো জানায়, তাকে চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে সোমবার রাতে পায়ের অপারেশন করা হয়েছে। সুস্থ হতে আরো যথেষ্ট সময় লাগবে।
জানতে চাইলে ধলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মীর হোসেন হৃদয় হামলায় তার জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার বাবা অসুস্থ, তাকে নিয়ে সপ্তাহে দুই-তিনদিন ফেনী ডায়াবেটিস হসপিটালে যেতে হয়। আমি বাবাকে সময় দিচ্ছি। আর নাজিম আমার ভাইয়ের বন্ধু তাকে কেনো আমি মারতে যাবো?
মমতাজ মিয়ার বাজার কমিটির সভাপতি নুরুল আবসার বলেন, বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। বাজারে অনুষ্ঠিত ১৫ আগস্টের আলোচনা সভায় চেয়ারম্যান সাহেব ভবিষ্যতে কোন ব্যবসায়ীর উপর কেউ হামলা করতে এলে তাকে আটকে পুলিশে দেয়ার অনুরোধ করেন।
ধলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আহমদ মুন্সির বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনার খবর তিনি জানেন না। হামলার কোন ঘটনা তার ইউনিয়নের ঘটেনি।
ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, এ বিষয়টি তিনি শুনেননি, থানায় কেউ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।