আজ আমি বন্ধুত্ব নিয়ে কথা বলব। হলমার্কের উপহার, গোলাপ কিংবা খরগোশের পুতুল দেওয়া বন্ধুত্ব নয়। সত্যিকার, বাস্তবিক বন্ধুত্ব—যে বন্ধুত্ব কখনো কষ্ট দেয়, কখনো জীবন গড়ে দেয়, কিংবা বদলে দেয়। নিজের জীবনের চারটি গল্প দিয়ে আমি বন্ধুত্বের গুরুত্ব বোঝাতে চেষ্টা করব।
প্রথম গল্প
প্রথম ঘটনা থেকে আমার শিক্ষা: যখন গুরুত্বপূর্ণ কিছু তোমার অজানা থাকবে, সত্যিকার বন্ধুরা ঠিকই তোমাকে জানাবে।
কলেজের প্রথম দিকে পরিচয় হয় কিনডার্নের সঙ্গে, যে আমার সঙ্গে কথা বলতে পছন্দ করত বলে মনে হতো। বিশ্বসভ্যতা কোর্সে আমাদের আলাপ। ধীরে ধীরে একে অপরের পরিবার সম্পর্কে জানতে শুরু করি, ডেটিংয়ে ঘটা দুর্ঘটনা নিয়ে কথা বলি, দুজনের খুঁতগুলোও একে অপরের চোখে পড়তে থাকে। মোদ্দাকথা, আমরা বন্ধু হয়ে উঠি। একদিন হঠাৎ কিনডার্ন বলে বসে, ‘রেইড, মানবজাতির অর্ধেক সম্পর্কে তোমার কোনো ধারণা নেই।’ অর্থাৎ নারীদের সম্পর্কে। অতটা চাঁচাছোলাভাবে সে বলেনি, কিন্তু এটাই বোঝাতে চেয়েছে।
সত্যিই। অনেক পুরুষের মতোই নারীদের সম্পর্কে আমার জ্ঞান ছিল শূন্যের কাছাকাছি। কিনডার্ন আমাকে কথা বলেই ক্ষান্ত হয়নি। সাহায্যও করতে চেয়েছে। তার বান্ধবীদের আড্ডায় আমাকে সে নিয়ে গেছে। যদি মেয়েদের আলাপ শুনতে আমি আগ্রহী হই। এখানে ‘যদি’র কোনো অবকাশই অবশ্য নেই। আগ্রহী হব না মানে!
তো এক বিকেলে ডর্মের বাইরে দাঁড়িয়ে আমি কিনডার্ন আর তার মেয়েবন্ধুদের আড্ডায় শামিল হলাম। ওরা এমন খোলা মনে কথা বলছিল, যেমনটা আমি আমার ছেলেবন্ধুদের সঙ্গেও কখনো বলি না। ওদের কথা শুনে কখনো কখনো আমার গাল লাল হয়ে উঠছিল।
তবে শুধু মেয়ে হওয়ার কারণে মেয়েদের যে প্রতিদিন এত রকম বাজে কথা শুনতে হয়, এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। অবাক হয়ে বলছিলাম, এভাবে একেকটা দিন কী করে পার করো তোমরা!
কিনডার্ন সেদিন আমাকে না নিয়ে গেলে অনেক কিছুই আমার অজানা থেকে যেত। এর পর থেকে সম্পর্কের ব্যাপারে আমি আরও সতর্ক হই। এই অভিজ্ঞতা আমাকে আরও ভালো বন্ধু, ভালো বস, ভালো স্বামী, ভালো বিনিয়োগকারী হতে শিখিয়েছে।