কুসিক নির্বাচন: আ’লীগের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি – Ajker Comilla

কুসিক নির্বাচন: আ’লীগের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি – Ajker Comilla






















আজকের কুমিল্লা ডট কম :

জুন ১৮, ২০২২


কুসিক নির্বাচন: আ’লীগের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি – Ajker Comilla

 

ডেস্ক রিপোর্ট:

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর মাত্র ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত । এই বিজয়ের ফলে ২৯ বছর পর কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন আওয়ামী লীগের দখলে এসেছে। কিন্তু অনেকেই এই বিজয়কে আওয়ামী লীগের বিজয় বলতে নারাজ। তারা মনে করছেন এটি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের ব্যক্তিগত বিজয়। তিনি এই নির্বাচনে তার একান্ত অনুগত প্রার্থীর জন্য মনোনয়ন আদায় করতে পেরেছিলেন এবং এই নির্বাচন যতটা না ছিল রিফাতের নির্বাচন তার চেয়ে বেশি ছিল বাহারের নির্বাচন। আর সেকারণেই কুমিল্লায় এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাহারের ক্ষমতা আরো সুদৃঢ় হল।  দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি আফজাল খান এবং আ ক ম বাহাউদ্দিনের বিরোধ ছিল প্রকাশ্য। এই বিরোধের কারণেই কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ জনপ্রিয় থাকার সত্ত্বেও কোনো নির্বাচনেই ভালো করতে পারতো না। তবে আফজাল খান মারা যাওয়ার পর বাহারের কর্তৃত্ব কুমিল্লায় আরো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে  এবং এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তার ষোল কলা পূর্ণ হলো বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

কিন্তু আরফানুল হক রিফাতের বিজয়ের ফলে আওয়ামী লীগের কি লাভ হলো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে। এর ফলে কুমিল্লায় যারা আফজালপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তারা কোণঠাসা হয়ে পড়বেন । যার ফলে এখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আরও বিভক্ত হয়ে পড়বে। আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। দ্বিতীয়ত, এই নির্বাচনে যেভাবে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে তা সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও সন্দেহের উদ্রেক করেছে এবং এর মাধ্যমে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে আরও বেশি ব্যবধানে জয়ী হতে পারতো বলেই অনেকে মনে করেন। কিন্তু এই নির্বাচনে আ’লীগের  বিশেষ ক্ষমতাধররা যেভাবে আচরণ করেছেন, তাতে সাধারণ ভোটাররাও কুণ্ঠিত হয়েছেন। তৃতীয়ত, এই নির্বাচনে বিএনপি’র বড় ধরনের শক্তির প্রকাশ ঘটেছে। বিএনপি’র ২ জন প্রার্থী এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সাক্কুর সঙ্গে বিএনপি’র আরেক নেতা কায়সারও প্রার্থী হয়েছিলেন এবং তিনি প্রায় ৩০ হাজার ভোট পেয়েছেন। তাহলে সেই হিসেবে দেখা যায় যে, বিএনপি কুমিল্লায় যথেষ্ট শক্তিশালী এবং আওয়ামী লীগের চেয়ে তাদের ভোট সেখানে বেশি। এটি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জন্য একটি বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, কুমিল্লার নির্বাচনে যেভাবে আ ক ম বাহাউদ্দিন এবং নির্বাচন কমিশনের দ্বন্দ্ব হয়েছে, সেটি সারাদেশের নির্বাচনের উপর একটি অশনি সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই নির্বাচনের আগে স্বতন্ত্রপ্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু অভিযোগ করেন যে, কুমিল্লা-৬ আসনের এমপি বাহাউদ্দিন আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে প্রচারণা করছে। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে তদন্ত করে। তদন্ত করে তারা এর সত্যতা পায়। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন বাহারকে এলাকা ত্যাগের জন্য চিঠি দেয়। কিন্তু আ ক ম বাহাউদ্দিন ওই চিঠি প্রত্যাখ্যান করেন এবং তিনি এলাকা ত্যাগ করেননি। নির্বাচন পর্যন্ত তিনি কুমিল্লায় অবস্থান করেছেন। এটি নির্বাচন কমিশনের একটি বড় পরাজয়। প্রশ্ন উঠেছে যে, নির্বাচন কমিশন একজন এমপিকেই নিয়ন্ত্রন করতে পারেননি, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নির্বাচন আইন ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি, তাহলে জাতীয় নির্বাচনে কি হবে? এই প্রশ্নটিই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ক্রমশ বড় হয়ে উঠবে এবং আওয়ামী লীগের অধীনে আগামী নির্বাচন সম্ভব, যে কথাটি নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের পর আওয়ামী লীগ বেশ জোরেশোরে বলে আসছে, সেই কথাটি কিছুটা হলেও হোঁচট খাবে। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, কমিল্লা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়েছে।

সূত্র: বা.ইন।
































আর পড়তে পারেন













Explore More Districts