মনসুর আলম খোকন,সাঁথিয়া : সাঁথিয়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার এর বিরুদ্ধে জাল দলিল করার এবং অতিরিক্ত ফি নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জাল দলিলের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা আদালতে মামলা দয়ের করেছেন। এমন তিনটি জাল দলিল সংক্রান্ত মামলার নথি সংরক্ষিত রয়েছে।
সাঁথিয়া উপজেলার হুঁইখালী গ্রামের মীর মোহাম্মদ খায়রুল কবির ওরফে দারা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পাবনা-৫ এ মামলা দায়ের করেছেন জাল দলিলকারী দাতা আরিফুল ইসলাম রবিউল ইসলাম এবং গ্রহিতা আসমা খাতুনের বিরুদ্ধে।
আসমা খাতুন কাশিনাথপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বর শামীম হোসেন ফকিরের স্ত্রী। দলিল নং ২৫৫২ (সাঁথিয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিস; ১৩.৩.২০২২)।
একই গ্রামের মীর মোহাম্মদ জাহিদ দুটি জাল দলিলের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা দায়ের করেছেন জুডিশিয়াল পাবনা-৫ আদালতে। মামলা নং ৮১/২০২২, তাং ৩.৮.২০২২; দলিল নং ৩৮০২/২০২২, তাং ২৫.৪.২০২২। উক্ত দলিলের দাতা মমতাজ আরা হক, আয়নুন নাহার ও জাহানারা বেগম। গ্রহিতা মোছাঃ শিলা পারভীন। তার স্বামী-আকতারুজ্জামান ফকির মিঠু রংপুরে একটি সরকারি অফিসের ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত আছে।
জাহিদ মীর অপর যে মামলাটি করেছেন ৮০/২০২২, তাং ৩.৮.২০২২ (সাঁথিয়া)। তিনি জাল দলিলের দাতা মোঃ আব্দুল বাতেন মিয়া, মোঃ ছালাম মিয়া, মোছঃ আয়েশা খাতুনসহ মোট ১৫ জনকে আসামী করে মামলা করেছেন । এদের সকলের বাড়ি সুজানগরের সোনাতলা। এছাড়াও জমির গ্রহিতা মোঃ রইজ শেখ, আমরিুল ইসলাম শানু এবং আব্দুল মতিন ফকিরকে আসামী করা হয়েছে। এদের সকলের বাড়ি হুইখালি।
বর্র্তমান সাব রেজিস্ট্রার মোঃ ফজলুল হক এর সময়েই এসব জাল দলিল সম্পাদন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদীগণ। সাব রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা যায়, জমি রেজিস্ট্রশনের সময় সাব রেজিস্ট্রারের যে সমস্ত মূল কাগজপত্র বা মূল নথিপত্র পুংখানুপুংখ যাচাই করা আবশ্যক তা হলো জাতীয় পরিচয়পত্র, মূল আর এস পরচা, পূর্ববর্তী মালিকের নামে জমি খারিজ আছে কি-না, এবং হাল সন পর্যন্ত খাজনা পরিশোধের রশিদ ইত্যাদি দেখার। বাদীপক্ষের অভিযোগ, যা সাব রেজিস্ট্রার যাচাই না করেই অর্থের বিনিময়ে দলিল সম্পাদন করেছেন।
এমন আরও ৮ টি জাল দলিলের সন্ধান পাওয়া গেছে। মূল কাগজপত্র যাচাই বাছাই না করেই দলিল সম্পাদন করার পেছনে রয়েছে অনৈতিক লেনদেন বা ঘুষ লেনদেন। শুধুমাত্র ফটোকপি করা পরচা, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ফটোকপি করা পূর্ববর্তী মালিকের টেম্পারিং দলিল দেখে সাব রেজিস্ট্রার দলিল সম্পাদন করায় এমন জাল জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগীরা মনে করেন। এনএন ফিসহ বিভিন্ন ফির ক্ষেত্রেও বেশি টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দলিল লেখকদের সঙ্গে সাব রেজিস্ট্রারের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।
জাল দলিল বিষয়ে সাব রেজিষ্ট্রারের বক্তব্যের জন্য অনেকবার তার মোবাইলে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি তার ব্যক্তিগত কর্মচারি রাসেলকে ফোনে বলার পরেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।