নির্দোষ শাহরুখপুত্র, সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ

নির্দোষ শাহরুখপুত্র, সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থার চোখে নির্দোষ শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান। আরিয়ানের বিরুদ্ধে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। চার্জশিট পেশ হতেই নড়েচড়ে বসল ভারত সরকার। এনসিবির প্রাক্তন কর্মকর্তা সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে এবার কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার।

অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়তে গেলে নিজেই সে গর্তে পড়ে যেতে হয়- ভারতের সাবেক মাদকদ্রব্য কর্মকর্তার সমীর ওয়াংখেড়ের ক্ষেত্রে অন্তত তাই ঘটতে যাচ্ছে। শাহরুখের ছেলে আরিয়ান খানকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যাচ্ছেন সমীর। আরিয়ান খানকে নিয়ে ‘অন্যায় তদন্ত’ করার জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, এমনটাই জানাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।

শুক্রবার (২৭ মে) কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কোর্ডেলিয়া ক্রুজ মাদক মামলায় খালাস দেয়া হয়েছে শাহরুখের ছেলে আরিয়ান খানকে। আরিয়ানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ নেই, এমনটাই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এনসিবি। এ দিন কেন্দ্রীয় সংস্থার পক্ষ থেকে এ মামলায় যে চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে সেখানেও নাম নেই আরিয়ানের।

এতে স্বভাবতই প্রশ্নের মুখে এনসিবির গ্রহণযোগ্যতা এবং কর্মপদ্ধতি। গত বছরের ২ অক্টোবর কোর্ডেলিয়া ক্রুজে অভিযান চালিয়েছিল এনসিবির যে দল তাঁদের তদন্তে বিস্তর পার্থক্য ও অসাঞ্জস্যতা পাওয়া গেছে তা একপ্রকার মেনে নিয়েছে এনসিবি।

এনসিবি’র ডিজি এসএন প্রধান বলেন, প্রাথমিকভাবে যে তদন্ত করা হয়েছিল তাতে বেশ কিছু ঘাটতি রয়েছে, বিশেষত তৎকালীন জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে যেভাবে মামলাটি পরিচালনা করেছেন।

জানা গেছে, আরিয়ান মামলা থেকে আগেই সরিয়ে দেয়া হয়েছিল সমীর ওয়াংখেড়েকে। ঘুষ নেয়া, হুমকি দেয়াসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। ভুলভ্রান্তিপূর্ণ তদন্তের কারণে কেন্দ্র সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রাক্তন এ এনসিবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ভুয়া কাস্ট সার্টিফিকেটের মামলায় ইতিমধ্যেই সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার।

এর আগে, ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট এনসিবির মুম্বাইয়ের জোনাল ডিরেক্টর পদে যোগ দিয়েছিলেন সমীর। ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিসের ২০০৮ ব্যাচের ওই কর্মকর্তাকে কার্যত ‘ধার’ করেই এনসিবি-তে নিয়ে আসা হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলা সম্পর্কিত মাদক মামলার তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে।

কার্যকাল শেষ হওয়ার পরেও এনসিবিতে তিন মাস মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছিল তার। সেই সময়ই ঘটে যায় আরিয়ান খান মাদক মামলা। আরিয়ান বিতর্কের মাঝেই ৩১ ডিসেম্বর এনসিবিতে শেষ হয় তার কার্যকাল। এখন তিনি ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্সে-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। আরিয়ানকে ক্লিনশিট দেয়া প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, আমার সঙ্গে এই মামলার এখন আর কোনো যোগ নেই. আমি দায়িত্বে নেই। তাই এই ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

অন্যদিকে, আরিয়ানকাণ্ডে ভীষণ চটেছেন শাহরুখ ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে নানান প্রতিবাদী কথা। অনেকে বলছেন, পরিকল্পিতভাবে আরিয়ানকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এনসিবির সাবেক এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করছেন তারা। এখন দেখা যাক, সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয় দেশটির সরকার।

/এসএইচ

Explore More Districts