
পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই পুরোদমে জমে উঠেছে বাংলার মানচেষ্টার নামে খ্যাত নরসিংদীর শেখেরচর বাবুরহাট। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাপড় ব্যবসায়ীরা পাইকারী কাপড় কিনতে ছুটে আসছেন শেখেচর বাবুরহাটে। এদিকে ঈদকে সামনে রেখে এখানকার ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে নিত্য নতুন ডিজাইনের কাপড়ের পসরা সাঁজিয়ে বসেছেন। শেখেরচর বাবুরহাট বণিক সমিতির সভাপতি মো: গিয়াস উদ্দিন এর সাথে আলাপ করলে তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান, শেখেরচর বাবুরহাটে দেশীয় কাপড়ের পাইকারী দোকানের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। দেশীয় কাপড়ের প্রায় ৮০ ভাগ চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে এ কাপড়ের বাজার থেকে। তিনি আরো জানান, গত বছর করোনার কারণে এখানকার কাপড় ব্যবসায়ীদের অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে। এ বছর তা পুষিয়ে নিতে আশার আলো দেখছেন এ বাজারের পাইকারী কাপড় ব্যবসায়ীরা। বণিক সমিতির সহ-সভাপতি একে ফজলুল হক জানান, প্রতি বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত সপ্তাহে চার দিন এখানে কাপড়ের হাট বসে থাকে। এ বাজারের দোকান গুলোতে বিভিন্ন প্রকারের শাড়ী, লুঙ্গি, থ্রি পিস, শার্ট পিস, থান কাপড় ও পাঞ্জাবির কাপড়সহ দেশীয় তৈরী সকল প্রকার কাপড়ের সমারোহ থাকে। আর এসকল দোকান থেকে কাপড় ব্যবসায়ীরা নিত্য নতুন ডিজাইনের কাপড় সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া ধণাঢ্যা ব্যক্তিরা তাদের জাকাতের কাপড় পাইকারী দামে কিনতে এ বাজারে আসছেন। তিনি আরো জানান, প্রতি সপ্তাহে শেকেচর বাবুরহাটে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কাপড় বেঁচাকেনা হয়ে থাকে। তবে ঈদ উপলক্ষে এর দ্বিগুন টাকার কাপড় বিক্রি হয়ে থাকে।
নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজর প্রেসিডেন্ট আলী হোসেন শিশির জানান, শেখেরচর বাজারে দেশের কাপড় উৎপাদনকারী প্রায় সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শোরুম রয়েছে। এসব বস্ত্র কোম্পানির বেশিরভাগ কারখানাও নরসিংদীকেন্দ্রীক। ফলে এখানকার উৎপাদিত কাপড়ের মান অত্যন্ত ভালো এবং দামেও সাশ্রয়ী। দেশের অন্যান্য স্থানের প্রস্তুতকৃত কাপড়ও পাওয়া যায় এ বাজারে।
বিষয়টি নিয়ে এ বাজারের বিশিষ্ট পাইকারী কাপড় ব্যবসায়ী মেসার্স হাসান ট্রেডার্সের সত্ত¡াধিকারী আলহাজ্ব মো: দাউদ মিয়া জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কাপড় বেঁচাকেনা সন্তুষজনক। গত বছরের লোকসান এবছর পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদি। এবাজারের অপর পাইকারী কাপড় ব্যবসায়ী মেসার্স ইসলাম ক্লথস্টোরের মালিক হাজী মো: নুরুল ইসলাম জানান, ঈদ উপলক্ষে এবাজারে পুরুষের চেয়ে মহিলাদের শাড়ী, থ্রি-পিছ এবং বোরকাসহ স্থান কাপড়ের পাশাপাশি ছোট মেয়ে বাচ্চাদের নতুন নতুন ডিজাইনের কাপড় কেনাকাটা করছেন অনেক পাইকারী কাপড় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে এখানে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারী জোরদার করা হয়েছে।