৩৪ বছর পূর্বে পুলিশ কনস্টেবল পদের হারানো চাকরি ফিরে পেতে বানারীপাড়ার আলী হোসেনের স্বরাষ্ট উপদেষ্টার কাছে আবেদন
৪ December ২০২৪ Wednesday ৬:৩১:৩৪ PM
রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি॥
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের চৌয়ারীপাড়া গ্রামের আলী হোসেন হাওলাদার ৩৪ বছর পূর্বে হারানো পুলিশ কনস্টেবল পদের চাকরি ফিরে পেতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
গত সোমবার করা তার এ আবেদন সুত্রে জানা গেছে, বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের চৌয়ারীপাড়া গ্রামের আলী হোসেন হাওলাদার ১৯৯০ সালে চট্রগ্রাম বন্দর থানাধীন নিউমুরিং পুলিশ ফাঁড়িতে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯০ সালের ৫ মে চট্রগ্রামের কর্নফুলি নদীতে জাহাজ থেকে অবৈধ বেনসন সিগারেট ও হুইস্কি ব্র্যান্ডিংয়ের চালান নামিয়ে একটি ট্রাকে করে পাচার করার সময় কনস্টেবল আলী হোসেনের নেতৃত্বে অবৈধ ওই মালের চালানসহ ৪ জনকে আটক করে বন্দর থানায় সোর্পদ করা হয়। অজ্ঞাত কারনে তৎকালীণ ওসিসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা পুরস্কারের বদলে আলী হোসেন হাওলাদারকে তিরস্কৃত করেন এবং চার আসামীসহ ওই অবৈধ মালের চালান ছেড়ে দেন। ওই বছরের ৫ জুন দিবাগত গভীর রাতে চট্রগ্রাম বন্দর এলাকার মেরিন ওয়ার্কসপের মালামাল চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনজন চোরকে চুরিকৃত মালামালসহ ওয়ার্কসপের প্রহরীরা হাতেনাতে আটক করে থানায় সোর্পদ করেন। ৬ জুন এ বিষয়ে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর-০৬-০৬-৯০। ওই আসামীদের আদালত থেকে ওই দিন রিমান্ডে পুনরায় থানায় নিয়ে আসা হয়। ৬ জুন গভীর রাতে আসামীরা থানাহাজত থেকে কৌশলে শিকল দেওয়া লোহার দরজার পাল্লা ফাঁক করে পালিয়ে যায়। থানা হাজত থেকে আসীমরা পালিয়ে যাওয়ায় তদন্ত শেষে ১৬ জুন থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই চুরির মামলায় আসামীদের মৌখিক ¯ী^কারোক্তী দেখিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে নিউমুরিং পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল আলী হোসেন হাওলাদার ও কনস্টেবল আব্দুল হান্নানকে জড়িত দেখিয়ে দুইজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও ১৯৯০ সালের ৬ জুন ১৬ জুন দায়েরকৃত পৃথক দুই মামলায়ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কনস্টেবল আলী হোসেন হাওলাদারকে আসামী করা হয়। পরবর্তীতে আব্দুল হান্নানকে বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যহতি দিয়ে চাকরিতে পুর্নবহাল করা হয়। বিভাগীয় মামলায় ১৯৯০ সালের ২৯ আগস্ট আলী হোসেন হাওলাদারকে চাকরিচ্যূত করা হয়। নিয়মিত দুটি মামলার আসামী হওয়ায় আলী হোসেন হাওলাদার ওই সময় চাকরি পুর্নবহালের আবেদন করতে পারেননি। আদালতে নির্দোষ প্রমানিত হওয়ায় মামলা থেকে খালাস পেয়ে তিনি ১৯৯৪ সালের ৩০ মে চাকরি ফিরে পেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরে সাড়ে ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও চাকরি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে তিনি সেখান থেকে কোন সমাধান পাননি। ফলে চাকরি ফিরে পেতে তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে চাকরি হারানো আলী হোসেন হাওলাদার বলেন,অবৈধ চোরাচালানের মাল ধরায় ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তাকে দুটি মামলায় আসামী করে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যূত করা হয়েছিল। চাকরি হারিয়ে তাকে পরিবার পরিজন নিয়ে দীর্ঘবছর মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে। বিগত রাজনৈতিক সরকারগুলোর আমলে তিনি ন্যায় বিচার পাননি। চলতি বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভূত্থানে গঠিত অর্ন্তবর্তীকালীণ সরকারের আমলে তিনি ন্যায় বিচারের মাধ্যমে চাকরি ফিরে পাবেন এ প্রত্যাশায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)